গৌরনদীতে ভিক্ষুকের সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা
গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহয়তায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চল খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কুনিয়াকান্দি গ্রামের অসহায় হতদরিদ্র বৃদ্ধ ভিক্ষুক আব্দুল হক মাতুব্বরের ক্রয়কৃত ও পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সহায় সম্পত্তি জবরদখল করে রেখেছে তার চাচাতো বোন ও বোনের ছেলেরা। নিরুপায় ওই বৃদ্ধ ভিক্ষুক তার সহায় সম্পত্তির জবরদখল মুক্ত করায় সহযোগীতা পেতে নিজের বিধবা মেয়েকে সাথে নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
গতকাল বুধবার দুপুর দুপুরে গৌরনদী প্রেসক্লাবে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে হতদরিদ্র বৃদ্ধ ভিক্ষুক আব্দুল হক মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, আমার হতদরিদ্র বাবা মৃত নোয়াব আলী মাতুব্বরের আমি একমাত্র ছেলে। আমার বাপ চাচারা ছিল তিন ভাই। উপজেলার এসএ রেকর্ডীয় জেএল ৫নং কুনিয়াকান্দি মৌজায় আমার দাদা মৃত মফিজ উদ্দিন মাতুব্বরের রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে আমি মোট ৩৭ শতাংশ সম্পত্তি পাবো। এ ছাড়া ওই মৌজায় আমার নিজের ক্রয়কৃত ১৮ শতক সম্পত্তি রয়েছে। সব মিলে আমি মোট ৫৫ শতক সম্পত্তির মালিক। ওই সম্পত্তির মাত্র ৩২শতক আমি ভোগ দখলে আছি। বাকি ২৩ শতক সম্পত্তি আমাকে ভোগ করতে দিচ্ছেনা। সম্পত্তি লোভী চাচাতো বোন কুলসুম বিবি ও তার দুই ছেলে রেজাউল চৌকিদার ও মোজাম্মেল ওরফে মুজাম চৌকিদার ওই সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছে। ওরা সেটেলমেন্ট জরিপের সময়েও কারসাজির মাধ্যমে আমাকে সম্পত্তির রেকর্ড থেকে বঞ্চিত করেছে। এ ঘটনায় আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম সেরনিয়াবাত এর কাছে বিচার দিয়েছি। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি ওদের পক্ষ নিয়ে চেয়ারম্যানকে ভূল বুঝিয়ে ম্যানেজ করে ফেলেছে। ফলে চেয়ারম্যান ওদের পক্ষ নিয়ে বিচারের নামে সাদা ষ্টাম্পে আমার টিপসহি নিয়ে আমাকে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে।
ভূক্তভোগী হতদরিদ্র বৃদ্ধ ভিক্ষুক আব্দুল হক মাতুব্বরে অভিযোগ অস্বীকার করে খাঞ্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম সেরনিয়াবাত বলেন, ত্রিশ বছর পূর্বে এক শালিশ বৈঠকে ওই সম্পত্তি মৌখিক এ্যাওজ বন্টনের মাধ্যমে উভয়পক্ষ ভোগ দখল করে আসছে। যেহেতু মৌখিক চুক্তি ফলে এর কোন দালিলিক প্রমান নেই। তাই আব্দুল হক রেকর্ড অনুযায়ী তার সম্পত্তি চাইতেই পারে। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আমি পুরোনো শালিশের রায় বহাল রেখেছি।
চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে অসত্য দাবি করে বৃদ্ধ ভিক্ষুক আব্দুল হক মাতুব্বর বলেন, আমি লেখাপড়া জানিনা। ফলে জমিজমার হিসাবও বুঝতাম না। কোন এ্যাওজ বন্টন আমি কখনো করিনি। ওরা গায়ের জোরে আমার সম্পত্তি জবর দখল করে ভোগ করছে। ওই সম্পত্তি লোভীদের কারনে এখন এই বৃদ্ধ বয়সে এসে আমাকে আমার একমাত্র বাকপ্রতিবন্দি ছেলে ও বিধবা মেয়েকে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন কাটাতে হচ্ছে। ওই সম্পত্তির জন্য ওরা অসংখ্য রাব আমাকে ও আমার ছেলে মেয়েকে মারধর করেছে। এখনও হুমকী দিয়ে যাচ্ছে যে, আমি বেশী বাড়াবাড়ি করলে আমাকে ও আমার বিধবা মেয়ে জুলেখা বেগমকে মেরে ফেলবে। আমি এর বিচার চাই। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানাই তিনি যেন আমার প্রতি একটু সদয় হন। আমার মত একজন হতদরিদ্র বৃদ্ধ ভিক্ষুকের সম্পত্তি যেন কেউ কেড়ে নিতে না পারে ।