আউলিয়াদের মাজারে সাহায্য চাওয়া শিরক নয় মিশরের গ্র্যান্ড মুফতি শাওক্বি আলম

0
(0)

মো.আহছান উল্লাহ।

মিশরের গ্র্যান্ড মুফতি একটি ফতোয়ায় বলেছেন: আউলিয়া এবং ধর্মীয় ব্যক্তিদের রওজায় দোয়া ও সাহায্য চাওয়া জায়েয । এটি শিরক নয় ।

মিশরের গ্র্যান্ড মুফতি শাওক্বি আলম একটি ফতোয়ায় বলেছেন: মাজারে দোয়া চাওয়ার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। এই বিষয়ে সালাফিরা দাবী করে যে শিরক, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শিরক নয়।

মিশরীয় চ্যানেল সাদি আল-বালাদে এক সাক্ষাৎকারে মুফতি শাওক্বি আলম বলেন: মহানবী (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন: “আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছি; “তবে এখনই তাদের জিয়ারত কর”।

মুফতি শাওক্বি আলম গুরুত্বারোপ করে বলেছেন: আমরা রওজা জিয়ারত করতে পরি এবং জরিঘর রওজারই অংশ। জরিঘর জিয়ারত করা মোস্তাহাব।

তিনি আরও বলেন: অধিকাংশ গীর্জা ইসলাম ধর্ম আবির্ভাবের পরে নির্মিত হয়েছে। এসকল গীর্জা আমর বিন আল-আস আমল থেকেই সরকারের সহায়তায় ইসলামী ভূমিতে নির্মিত হয়েছে।

তার বক্তৃতার অন্য একটি অংশে তিনি বলেন: আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে বিচারের মালিক মহান আল্লাহ এবং পৃথিবীর বুকে আল্লাহর রায় কার্যকর করার জন্য স্পষ্ট মত প্রকাশের প্রয়োজন। তিনি জোর দিয়ে বলেন: পাপ কাউকে ধর্ম থেকে দূরে সরিয়ে দেয় না, তবে এ জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

উল্লেখযোগ্য যে, ওহাবীদের মধ্যে আজ যে সন্দেহ প্রচলিত রয়েছে তা ইবনে তাইমিয়াহ নামে এক ব্যক্তি তৈরি করেছে। ইবনে তাইমিয়াহ নবী করিম (সা.) এবং আউলিয়াদের রওজা মুবারক জিয়ারতকে হারাম এবং মুশরিক বলে বিবেচনা করতো। এমনকি মহানবী (সা.)এর রওজা মুবারক জিয়ারতের জন্য যদি কেও প্রস্তুতি গ্রহণ করতো, তাহলেও তা সে বৈধ মনে করতো না।

নবী করিম (সা.) হতে আবু হুরায়রাহ বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) মসজিদুল হারাম, মসজিদে নববী এবং মসজিদুল আকসার উদ্দেশ্যে ব্যতীত কোন সফর (ভ্রমণ) জায়েজ মনে করতেন না। এছাড়াও দাবী করা হয়েছে যে, যদি কেও জিয়ারতের উদ্দেশ্য সফর করে, তাহলে সে মুসলিম জনগণের বিরোধিতা করেছে এবং মহানবীর (সা.) শরিয়তের বাহিরে চলে গিয়েছে। আর এই দু’টি কারণে ইবনে তাইমিয়াহ করব জিয়ারতকে বৈধ মনে করে না।

তবে শিয়া ও অন্যান্য মাজহাবের আলেমগণের মতে আমরা যখন কুরআন এবং আহলে বাইত (আঃ)এর শিষ্টাচারের দিকে নজর দিই, তখন আমরা এই ইস্যুটির বিপরীত বিষয়টি দেখতে পাই, অর্থাৎ কবর জিয়ারত মোস্তাহাব আর এই বিষয়ে সকলে একমত পোষণ করেছে। উদাহরণ স্বরূপ পবিত্র কুরআনের সূরা তওবার ৮৪ নম্বর আয়াত

وَلَا تُصَلِّ عَلَىٰ أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلَا تَقُمْ عَلَىٰ قَبْرِهِ ۖ إِنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُوا وَهُمْ فَاسِقُونَ

এবং (যদি) তাদের মধ্যে কেউ মারা যায়, তবে না তার ওপর (জানাযার) নামায পড়বে, আর না তার কবরের পাশে দাঁড়াবে; এজন্য যে, তারা আল্লাহ ও তার রাসূলকে অস্বীকার করেছে এবং অবাধ্য অবস্থায় তাদের প্রাণ বের হয়েছে।

এই আয়াতে এটাই স্পষ্ট যে, মহান আল্লাহ তালায় রাসুলকে (সা.) মুশরিক ও মুনাফিকেদর কবরের পাশে দাঁড়াতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু আয়াতের তাৎপর্যে এটা প্রমাণিত হয় যে, মু’মিনদের করবের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.