0
(0)

মোঃ আহছান উল্লাহ ।

আমাদের দেশের প্রায় সকল এলাকায় বিনাচাষে জন্মানো ব্রাহ্মী শাকে আছে অনেক ধরণের কার্যকরী উপাদান। এই উপাদানগুলি মানবশরীরে প্রবেশ করা মাত্র হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়ে যায়, ফলে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বারে । মনোযোগ বাড়াতেও ব্রাহ্মী বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে, কারণ ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতার উপর মনোযোগ কমা বাড়ার তারতম্য নির্ভর করে। তাই ব্রাহ্মী শাক নিয়মিত খেলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। শুধু শরীরের উপকারই নয়, বানিজ্যিকভাবে ব্রাহ্মী চাষ করে লাভবান হতে পারেন।

প্রধানত জলজ এলাকায় অর্থাৎ আদ্র জলাভূমিতে নিষ্কাশিত মাটিতে স্বাভাবিকভাবেই এই উদ্ভিদগুলি বৃদ্ধি পায়। অম্লীয় প্রকৃতির মাটি এই ব্রাহ্মী চাষের জন্য যথোপযুক্ত।

এই বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদটির উপকারিতা সম্পর্কে প্রায় কম বেশী সকলেই অবগত। আয়ুর্বেদিক ওষুধগুলিতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রূপে ব্যবহৃত হয় ব্রাহ্মী। এটি স্নায়বিক এবং মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ন্যাচারাল রেমিডিস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থা ব্রাহ্মী উদ্ভিদ থেকে রাসায়নিক যৌগ নিষ্কাশন করে তৈরি করে ব্যাকোসাইড নামে একটি রাসায়নিক যৌগ বাজারে বিক্রি করে।

ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ দেহে প্রবেশ করে আলসার সৃষ্টি করি এইচ.পাইলোরি ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে, ফলে আলসারের মতো রোগের আশঙ্কা কমে যায়।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত একাধিক উপকারী উপাদান, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র কিছু নিউরো ট্রান্সমিটারের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে এপিলেপসির মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খেলে মস্তিষ্কের অন্দরে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির জন্ম দেওয়া কর্টিজল হরমোনের ক্ষরণ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মানসিক চাপ যেমন কমে, তেমনই মনের হারিয়ে যাওয়া আনন্দও ফিরে আসে। প্রসঙ্গত বলা যায়, বর্তমান দিনে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে চাকুরীজীবী সকল মানুষই নানা কারণে ভীষণ মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন, ফলে ডিপ্রেশনের মতো মানসিক রোগের কবলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এরকম পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মী শাক খেলে সমস্তরকম মানসিক রোগ থেকে মেলে মুক্তি।

এই শাকটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এই উপাদানটি শরীর থেকে নানাবিধ ক্ষতিকর উপাদানদের বের করে দিয়ে একদিকে ক্যান্সার কোষের জন্ম রোধ করে এবং অন্যদিকে সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।

ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত ব্যাকোসাইড নামক এক ধরনের রাসায়নিক জৈব-বস্তু (বায়ো-কেমিক্যাল)। এটি ব্রেন টিস্যুর ক্ষত সারিয়ে তাদের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্রেন-এর কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। অপরদিকে, কগনিটিভ ফাংশান কমে যাওয়ার সম্ভবনাও কম থাকে, ফলে অ্যালঝাইমার রোগের আশঙ্কা কমে যায়।

 

অতিরিক্ত টেনশনের কারণে ব্লাড প্রেশার ওঠা নামা করে। ব্রাহ্মী শাক রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া, রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে যাতে কোনও ধরণের ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত অনেক ধরণের কার্যকরী উপাদান। এই উপাদানগুলি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়ে যায়, ফলে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি চোখে পড়ার মতো বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মনোযোগ বাড়াতেও ব্রাহ্মী বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে, কারণ ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতার উপর মনোযোগ কমা বাড়ার তারতম্য নির্ভর করে। তাই ব্রাহ্মী শাক নিয়মিত খেলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

নিয়মিত এই শাকটি খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলতে সাহায্য করে। এর ফলে অনায়াসেই রোগের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায়।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.