বরিশালে মহানগর আ’লীগের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন ওবায়েদুল কাদের

0
(0)

এস এম রহমান হান্নান,স্টাফ রিপোর্টার।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক এবং সড়ক, যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের-এমপি বলেছেন, বিএনপি এখন বাংলাদেশ নালিশ পার্টিতে পরিনত হয়েছে। কান্নাকাটি আর নালিশ করা ছাড়া এখন আর তাদের কোন রাজনীতি নেই। ঈদের পরে নাকি তারা দুর্বার আন্দোলনে নামবে। কিন্তু দিন গেলো, সপ্তাহ গেল, মাস গেলো আন্দোলনের কোন খবর নেই। কারন বেগম জিয়া বুঝতে পেরেছেন বিএনপি’র আন্দোলনে কেউ সাড়া দিবে না। তাইতো বেগম খালেদা জিয়া ভয় পেয়ে লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগ আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র বক্তৃতায় আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেছেন। শহরের ফজলুল হক এভিনিউ সড়কে বিসিসি’র নগর ভবনের সামনে মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী আলোচনা সভায় প্রধান অথিতি আরো বলেন, বিএনপি কখনো আওয়ামীলীগকে দোষ দিচ্ছে, আবার কখনো নির্বাচন কমিশনকে দুষছেন।
জোট সরকারের আমলে বিএনপি’র বিভিন্ন সমালচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, হত্যা, গুম খুনের মধ্যে দিয়েই বিএনপি’র উত্থান। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে হত্যা, গুম খুন করেছে। আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরা বাড়িতে ঘুমতে পারেনি। তাদের বাড়ি-ঘর, জমি, গাছ-পালা কেটে নিয়ে গেছে। লুটপাট করেছে। কিন্তু আওয়ামীলীগ শন্তির দল। তাই আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতার আমলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা শান্তি আছে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে তার একটি ভাঙ্গা সুটকেট ছিলো। কিন্তু সেই সুটকেস এর ভেতরে কি আলাদিনের চেরাগ ছিলো যে এক সাথে সাতটি কোকো লঞ্চ নেমে গেলো। আওয়ামীলীগ দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী নয়। এটা বিএনপিকেই মানায়। দশ ট্রাক অস্ত্র তারাই এনোছিলো। বিদেশের আদালতে দুর্নীতি মামলায় তাদেরই সাজা হয়েছিলো।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি’র আন্দোলন মানেই মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা। বাস-ট্রাকে পেট্রোল বোমা মেড়ে মানুষ হত্যা, স্কুল ছাত্র’র চোখ নষ্ট করে দেয়া, মানুষের গাছ-পালা কেটে ফেলে মানুষকে কষ্ট দেয়। আন্দোলনের নামে তারা ১৬৫ জনকে পুড়িয়ে সহ বিভিন্ন ভাবে হত্যা করেছে। বাংলা ভাই এবং এরশাদ সিকদারের মত সন্ত্রাসীদেরও জন্ম দিয়েছিলো তারা।
বরিশালে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর আগমন এবং সদস্য সংগ্রহের সমালচনা করে বলেন, মহাসচিব বরিশালে এসে জয় করে যেতে পারেননি। বরং বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভয় পেয়ে গেছেন। তিনি একজন মহাসচিব। কিন্তু তার সামনেই বিএনপি নেতা-কর্মীরা মারামারি-ধাক্কা ধাক্কি এবং বিশৃঙ্খলা করেছেন। তিনি একজন মহাসচিব হলেও নেতা-কর্মীদের থামাতে পারেননি। তাই নেতা-কর্মীদের ভয়ে সড়ক পথে বরিশাল থেকে পালিয়ে গেছেন। কিন্তু বলছেন তাকে অসম্মানের কথা। শুধু বরিশালেই নয়, বিএনপি যেখানেই জেলা সম্মেলন করছে সেখানেই নিজেদের মধ্যে মারামারি ও বিশৃঙ্খলা করছে। কারন নেতা-কর্মীরা নিজেরাই এখন হতাশ।
ওবায়দুল কাদের তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, একজন রয়েছেন তিনি গত সাড়ে ৮ বছর পূর্বে পালিয়েন। এখন আর ফিরে আসার কোন খবর নেই। হামলা, মামলা এবং আদালতে ভয়ে তিনি পালিয়ে আছেন। যারা হামলা, মামলা, নির্যাতনের পালিয়ে যায় তাদের নির্বাচন নিয়ে স্বপ্ন দেখা মানায় না। দেশের জনগন ২০০১ সালের সেই ভয়াল চিত্র আর দেখতে চায় না। আগামী ২০২১ সালের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামীলীগকেই আবার বিজয়ী করবে। কেননা মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে হবে, স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হবে আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে, গনতন্ত্র এবং উন্নয়নকে বাঁচাতে হলো আওয়ামীলীগকে আরো একবার ক্ষমতায় আনতে হবে।
প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, একমাত্র আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নয়ন হয়। বরিশাল নিয়ে আমাদের নেত্রীর পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোপূর্বে এই অঞ্চলে সেতু, রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় নির্মান করেছেন। তাছাড়া ফরিদপুর থেকে বরিশাল নগরীর গড়িয়ারপাড় পর্যন্ত ফোর লেন রাস্তা নির্মান প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। পাশাপাশি গরিয়ারপাড় থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফোর লেন সড়ক নির্মানের জন্য সিপিপি তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে প্রেরনরে নির্দেশ দেন সড়ক ও জনপদ বিভাগকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত এবং বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের সিনিয়র কার্যনির্বাহী সদস আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ-এমপি, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আব্দুল রহমান-এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম-এমপি, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন এবং বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস-এমপি।
এছাড়া অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম রব্বানী তিলু, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর ও সহ-সাধারন সম্পাদক গাজী নঈমুল হোসেন লিটু। এছাড়া বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ উপচ্ছিন ছিলেন।
আলোচনা সভার পূর্বে নতুন ভোটারদের আওয়ামীলীগের সদস্য ফরম পুরনের মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং জ্যেষ্ঠ নেতাদের ফরম পুরনের মাধ্যমে সদস পদ নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন দলের সাধারন সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের। আজ শুক্রবার তিনি বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কে লেবুখালী সেতুর নির্মান কাজ পরিদর্শনে যাবেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.