গৌরনদীতে যুবলীগ নেতাকে গুলি ইউপি চেয়ারম্যাসহ ৭ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ

0
(0)

গৌরনদী (বরিশাল) সংবাদদাতাঃ
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা নাজমুল সরদারকে গুলি করে কুপিয়ে ও মৎস্য ঘের পাহারাদার রসুল খলিফাকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ যুব ও ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে গৌরনদী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শনিবার বিকালে আহত নাজমুল সরদারের মা উপজেলার মাহিলাড়া গ্রামের সুফিয়া বেগম বাদি হয়ে এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার মাহিলাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক সৈকত গুহ পিকলু, তার সহোদর (ছোট ভাই) সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সলিল গুহ পিন্টু, ইউপি সদস্য হাসান আল মামুন, ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা পলাশ কবিরাজ, শওকত সরদার, সোহেল হাওলাদার ওরফে সানু, শিপন সরদার। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযোগাট এফআইআর ভুক্ত হয়নি।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদির ছেলে নাজমুল সরদার বিভিন্ন স্থানে পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ ও জমি লিজ নিয়ে বরজে পান চাষ করে আসছে। তাই মৎস্য চাষি নাজমুল গত ৬ মাস পূর্বে মাহিলাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সৈকত গুহ পিকলুকে নগদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তিন বছরের জন্য ওই বিদ্যালয়ের ৩টি পুকুর লিজ নেয়। লিজের টাকা পাওয়া সত্যেও পিকলু বিদ্যালয়ের পুকুর বুঝিয়ে না দিয়ে নানান টালবাহানা করে আসছে। এ নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় নাজমুল ও পিকলুর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বেজহার গ্রামের মহিষের বিলে বাদির ছেলে নাজমুল সরদারের একটি মাছের ঘের রয়েছে। ঘের পাহারার জন্য জবেদ খলিফা ওরফে রসুল খলিফা সেখানে একটি টং ঘরে বসবাস করেন। ১৫ নভেম্বর গভীর রাতে নাজমুল ওই টং ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওইদিন রাত আড়াইটার দিকে পিকলু’র নেতৃত্বে তার (পিকলু’র) সহোদর পিন্ট গুহসহ আসামিরা ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওই টং ঘরে হামলা চালায়। আসামি পিকলু প্রথমে নাজমুলের ডান পায়ের উরুতে গুলি করলে তা ভেদ করে বেরিয়ে যায়। এরপর পিন্টু নাজমুলকে কুপিয়ে আহত করে। এ সময় মৎস্য ঘের পাহারাদার রসুল ডাকচিৎকার করলে তাকেও বেদম মারধর করে অন্য আসামিরা। এক পর্যায়ে আসামিরা নাজমুলের চোখসহ মুখমন্ডলে চুন ঘষে দেয় ও টং ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ওইদিন ভোররাতে বরিশালের বেসরকারী রাহাত আনোয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, নাজমুল ও রসুলের ওপর হামলা চালানোর ঘটনায় নাজমুলের মা বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে শনিবার বিকালে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ১৫ নভেম্বর সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া এসআই তরিকুল ইসলাম ২ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করেছে। গুলি উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধারকৃত গুলি কার তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমা-ার (সাংগঠনিক) আনোয়ার রাঢ়ীর সঙ্গে মাহিলাড়া ইউপির চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু’র দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় মাহিলাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচীর আলোচনা সভা শেষে আনোয়ার রাঢ়ীর ছেলে মাহিলাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে যুব ও ছাত্রলীগের ২৫/৩০ নেতাকর্মী চেয়ারম্যান পিকলুকে মারধর করে। ওই হামলার সাথে জড়িত ছিলেন নাজমুল সরদার। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান পিকলু বাদী হয়ে রাসেল ও নাজুমলসহ ১২ জনের নামোল্লেখ করে যুব ও ছাত্রলীগের ১৮ নেতাকর্মীকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রাসেল ও মঙ্গল সরদার বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। ওই ঘটনার জের ধরে গত ১৫ নভেম্বর ভোররাতে বেজহার গ্রামের মহিষের বিলের মৎস্য ঘেরের টং ঘরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.