আগৈলঝাড়ায় কার্ডের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিশু টিকাদান কর্মসূচি

0
(0)

জয় রায়, আগৈলঝাড়া ==
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় টিকাদান কার্ডের অভাবে মাসের পর মাস ধরে ব্যাহত হচ্ছে শিশুদের স্বাভাবিক ইপিআই টিকাদান কর্মসূচি। হলুদ রংয়ের ওই কার্ডের অভাবে মাঠপর্যায়ের ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে এখন সাদাকাগজে হাতে লিখে দেয়া হচ্ছে শিশুদের টিকার রুটিন প্ল্যান। অনেক জায়গায় আবার কার্ডের ফটোকপি করেও কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে আগামী ২ মাসের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইপিআই টিকাদান কার্ড মূলত: শিশুদের যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোক্কালজনিত নিউমোনিয়া ও রুবেলা রোগের টিকা প্রদানের সেশন প্লানের কাজে ব্যবহৃত হয়। যাকে টিকার ক্যালেন্ডারও বলা চলে। ৪২ দিন পূর্ণ হওয়া শিশুকে প্রথম টিকা প্রদানের দিন থেকে এ কার্ডটি নবজাতক শিশুর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি কার্ডটি শিশুকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময়, বিদেশ গমণের সময়, টিডি টিকা দেয়ার সময় আর বর্তমান সময়ে জন্মনিবন্ধনের কাজেও লাগে। যা কার্ডের গায়েও ছাপার অক্ষরে লিপিবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এই কার্ড নেই বললেই চলে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ইপিআই লোকমান হোসেন জানান, এই উপজেলার জন্য বছরে ৪ হাজার ৮শ’ ২৪টি কার্ডের চাহিদাপত্র বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তার বদলে এবছর মাত্র ৩শ’ কার্ড তারা পেয়েছেন।
হাসপাতালের ইপিআই কেন্দ্রের নাম না প্রকাশের শর্তে এক সেবিকা জানান, ১২৮টি টিকাদান কেন্দ্রে মাসে ২শ’ থেকে ৩শ’ টি নতুন টিকাদান কার্ডের প্রয়োজন হয়। গত ৩ মাস ধরে কার্ডের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। মাঝখানে কিছু কার্ড পেলেও অল্প কয়েক দিনের মধ্যে তা শেষ হয়ে যায়। এরপর কার্ডের ফটোকপি দিয়েও টিকাদান কর্মসূচি চালিয়েছেন। বর্তমানে তাও না থাকায় এখন সাদাকাগজে লিখে দিচ্ছেন। যা নিয়ে প্রায়ই পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। সাদাকাগজে লিখে দেয়া বা ফটোকপিতে লিখে দেয়ার বিষয়টি অভিভাবকরা কোনভাবেই মানতে পারছেন না। তারা এ নিয়ে ইপিআই কর্মীদের সাথে ঝগড়া-বিবাদও করে থাকেন। সিভিল সার্জন অফিসে প্রতি মাসেই চাহিদাপত্র দিলেও তাদের কাছেও এ কার্ড নেই বলে তারা জানান। কার্ড না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা অভিভাবক কামাল মিয়া জানান, হাসপাতালে সন্তানকে টিকা দেয়ার সময় সাদাকাগজে পরবর্তী তারিখের কথা লিখে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু দায়িত্বরত কর্মীদের কাছে হলুদ কার্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে সরবরাহ নেই বলে তারা জানান। অথচ এই কার্ড ছাড়া কোন বাচ্চার জন্মনিবন্ধনও করা যাবেনা।
বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এখন ফটোকপি বা সাদাকাগজে টিকাদান কার্ডের কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কার্ড এলে সেগুলো ঠিক করে দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তারা কার্ড ছাপতে দিয়েছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। আগামী ২-১ মাসের মধ্যে কার্ডের সংকট আর থাকবে না।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.