অচিরেই পানিশূন্য হতে চলেছে ইস্তাম্বুল

0
(0)

তুরস্কের প্রধান শহরগুলি আগামি কয়েক মাসের মধ্যে পানিশূন্য হবে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যেই পুরো দেশে পানির জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইস্তাম্বুলের। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ৪৫ দিনের মধ্যেই পানিশূন্য হয়ে পড়বে এক কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার তুরস্কের অন্যতম প্রধান এ শহরটি।

তুরস্কের রাসায়নিক ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, এক দশকের মধ্যে কম বৃষ্টিপাতের ফলে দেশটিতে সবচেয়ে মারাত্মক খরার সৃষ্টি হয়েছে। পানিশূন্যতা দেখা দেওয়ায় ইতমধ্যে ১৭ মিলিয়ন মানুষ দেশটির মেগাসিটিগুলো ছেড়েছে। আঙ্কারার মেয়র মনসুর ইয়াভা জানিয়েছেন, এই মাসের শুরুর দিকে রাজধানীর বাঁধ ও জলাধারগুলিতে ব্যবহারের জন্য ১১০ দিনের পানি মজুদ ছিল।

ইস্তাম্বুল ওয়াটার এন্ড স্যুয়েরেজ অথোরিটি’র মতে, দেশটি বর্তমানে ‘ওয়াটার স্ট্রেস’-এ ভুগছে। কারণ সেখানকার জলাধারগুলোয় মাত্র ২৯.৮% পানি মজুদ রয়েছে। ২০১৪ সালের এক খরায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল যে, সেখানে মাত্র ১০০ দিনের মতো পানি মজুত ছিল।

দেশের অন্যান্য শহরগুলোরও একই অবস্থা। আরো দুটি বড় শহর ইজমির ও বুরসায় যেসব বাঁধ রয়েছে সেগুলোতে যথাক্রমে ৩৬ ও ২৪ শতাংশ পানি অবশিষ্ট রয়েছে। এ অবস্থার জন্য দায়ী করা হচ্ছে নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে। উন্নয়ন কাজে পানির অপরিমিত ব্যবহারের কারণেই এ সঙ্কট বলে অভিযোগ উঠেছে। ইস্তাম্বুলের পানি সরবরাহের প্রধান উৎস ওমেরিল বাঁধের পানির স্তর গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে। সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

পুরো দেশে খরা এমন প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে যে, গত মাসে মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনাগারগুলোতে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। নভেম্বরে প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র অর্ধেক বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে দেশটিতে পানির ভয়াবহ অভাব দেখা দিয়েছে।

তুরস্ক দেশটি প্রধানত চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির। দেশটিতে পানির অভাব সব সময় থাকে। বছরে দেশটি মাত্র এক হাজার ৩৪৬ ঘনমিটার পানি উৎপাদন করে থাকে। প্রত্যেক শহরে বাঁধ ও রিজারভায়র তৈরি করে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বৃষ্টির সময় বাঁধের অভ্যন্তরে জমা পানির ওপরই নির্ভর করতে হয় সারা বছর।

২০৩০ সালের মধ্যে অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কারণ বর্তমান বছরগুলোর শুষ্ক মাসগুলোতেই ইস্তাম্বুলের প্রায় ১৪ মিলিয়ন মানুষ পানির অভাবে ভোগেন। তাই যথাযথ ব্যবস্থা এখনই গ্রহণ না করলে অদূর ভবিষ্যতে ইস্তাম্বুলকে যে মারাত্মক পানির সংকটে ভুগতে হবে তা বলাই বাহুল্য। সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.