৪৯ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি গৌরনদীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হারুন খলিফা (৭৪)

0
(0)


স্টাফ রিপোর্টার,গৌরনদী।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কান্ডপাশা গ্রামের অসহায় মোঃ হারুন খলিফা (৭৪)। তিনি ওই গ্রামের মৃত কেরামত খলিফার পুত্র। তিনি আজ জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে নিজেই এক পরাজিত সৈনিক। এই বৃদ্ধ বয়সেও ভ্যান চালিয়ে তাকে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। তার সহযোদ্ধারা সবাই মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হয়ে ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু তার নাম তালিকাভুক্ত না হওয়ায় তিনি ভাতা পাচ্ছেন না।
জানাগেছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ যুদ্ধ শুরু হলে স্থানীয় নলচিড়া গুচ্ছ গ্রামের কালু খান,কান্ডপাশা গ্রামের কদম খান, মোফাজ্জেল বালী, আউয়াল প্যাদা, পিংগলাকাঠী গ্রামের আক্কাছ প্যাদা,বাসুদেব পাড়া গ্রামের কাঞ্চন প্যাদা সহ এলাকার আরো কিছু যুবকদের সাথে মোঃ হারুন খলিফা ট্রেনিং গ্রহনের জন্য ভারত গমন করেছিলেন।
অসহায় মোঃ হারুন খলিফা জানান,ভারতের চব্বিশ পরগানার হাসনাবাদের আ¤øানী ক্যাম্পে ট্রেনিং গ্রহন করি। ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ ছিলেন পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার আবুল কাসেম। ট্রেনিং শেষে গৌরনদীর বাসুদেবপাড়া গ্রামের এচাহাক প্যাদার নের্তৃতে ১৮ জনের একটি গ্রæপ দেশে ফিরে আমরা ৯ নং সেক্টরের আঞ্চলিক কমান্ডার নিজাম উদ্দিনের বাহিনীর সাথে যুক্ত হই। অতপর নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে বরিশালের অফদা কলেনী,গৌরনদীর হোসনাবাদ,বাটাজোর,গৌরনদী কলেজ,কসবাসহ বিভিন্ন স্থানে পাকসেনাদের সাথে সন্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার একবছর পর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হারুন খলিফা জীবিকার তাগিদে ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালানো শুরু করেন।
জানাগেছে, ২০০৩ সালে হারুন খলিফার বসত আগুনে ঘর পুড়ে যাবার কারণে তার মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র বিনষ্ট হয়। এছাড়া দীর্ঘ ৩ যুগ ঢাকায় থাকার কারণে তিনি এলাকার সাথে তেমন একটা যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেননি তাই মুক্তিযোদ্ধার তালিকা খেকে তার নাম বাদ পড়ে।
গৌরনদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সৈয়দ মনিরুল ইসলাম জানান, হারুন খলিফা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ভাতা পাননা,তার নাম তালিকায় নেই এটা বড়ই কষ্টের কথা। অথচ গৌরনদীর বিভিন্ন এলাকার বহু লোক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। তারা যুদ্ধ না করে এমনকি ট্রেনিং না নিয়েও মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভূক্ত হয়েছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এই বৃদ্ধ বয়সেও অটোভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হারুন খলিফা। তার জীবনের শেষ ইচ্ছা , মরার আগে তিনি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম দেখতে চান। এ জন্য তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.