প্রশংসায় ভাষছে পুলিশ ২৪ ঘন্টায় গৌরনদীতে নির্মম হত্যা রহস্য উৎঘটন

0
(0)


আহছান উল্লাহ ও বিডি কামাল।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ভ‚রঘাটা বাস টার্মিনালে যাত্রীবাহী বাসে ড্রামের ভেতর পাওয়া লাশ হতভাগী গৃহবধু তিন সন্তানের জননী সাবিনা বেগমের (৩৪)। তাকে মাথায় হ্যামার দিয়ে আঘাত করে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের ভিমেরপাড় গ্রামের আঃ খালেক হাওলাদারকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারলেও তার স্ত্রী রহিমা বেগম (৪৫)কে গ্রেফতার করেছে। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই সাবিনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। অপরদিকে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক চৌকস পুলিশ অফিসার মোঃ আফজাল হোসেন ও ইনভেষ্টিগেসন টিমের সদস্যরা ২৪ ঘন্টায় হত্যারহস্য উৎঘটন করায় প্রশংসায় ভাষছেন তারা। স্থানীয় ব্যবসায়ী কামাল হোসেন,মুন্সি রুবেল,হাবিব সরদার,মনির সরদারসহ আরো অনেকেই পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টায় নির্মম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন প্রসংশনীয়।
সুত্রমতে, পুলিশ হত্যাকান্ডের স্থান চিহ্নিত করে হত্যায় ব্যবহৃত আলামত হিসেবে হ্যামার ও রশির অংশ বিশেষও উদ্ধার করেছে। পুলিশের ধারনা গত শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত আঃ খালেক হাওলাদারকে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

জানাগেছে, নিহত সাবিনা বেগমের স্বামী গৌরনদী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াশুর এলাকার শহিদুল ইসলাম ্ওরফে শফিকুল কাতার থাকেন। তার স্ত্রী সাবিনা তিন সন্তানকে নিয়ে থাকতেন নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায়।
সাবিনার দেবর মো. মনির হাওলাদার জানান, কাতার যাওয়ার জন্য ভিমেরপাড় গ্রামের খালেক হাওলাদার তার ভাবীর (সাবিনা) কাছে ৪ লাখ টাকা দেয়। বিদেশ পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় এক পর্যায়ে খালেক টাকা ফেরত চায়। সাবিনা বেগম তাকে (খালেক) দেড় লাখ টাকা ফেরত দেয়। বাকী আড়াই লাখ টাকা পায় খালেক। পাওনা টাকার জন্য বিভিন্ন সময় তাগাদা দিত খালেক। বিদেশ যেতে না পেরে খালেক বরিশাল নগরীর কাশীপুর আনসার ব্যাটালিয়ন অফিস সংলগ্ন ভ‚ঁইয়া বাড়ি মসজিদের পাশে মাহিলাড়ার বাসিন্দা ব্যাংকার শচীন রায়ের নির্মাণাধীন ১টি ভবনে ম্যানেজার হিসেবে কাজ নেয়। নারায়নগঞ্জ থেকে গত শুক্রবার সকালে গৌরনদীর দিয়াসুর গ্রামে স্বামীর বাড়ি আসে সাবিনা। ওইদিন সকাল ৯টায় বরিশাল যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে একা বের হয় সে। সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

 

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক মো. আফজাল হোসেন জানান, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত শুক্রবার সকালে কৌশলে সাবিনাকে বরিশাল নগরীর কাশীপুরে ডেকে নেয় খালেক। কর্মস্থল নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে খালেক তার মাথার পেছনে হ্যামার (বড় হাতুড়ি) দিয়ে আঘাত করে । গলায় রশি পেঁচিয়ে সাবিনার মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনিরা। হত্যাকান্ডের পর লাশ গুম করতে বড় ড্রামের মধ্যে সাবিনার লাশ ঢুকিয়ে গড়িয়ারপাড় বাসস্ট্যান্ড থেকে ভ‚রঘাটাগামী যাত্রীবাহী একটি লোকাল বাসের ভেতর ড্রামটি উঠায় খালেক। বাসটি ভ‚রঘাটা যাওয়ার পর জনৈক ব্যক্তি ভ্যান আনার কথা বলে চলে যায়। কেউ ড্রামটি নিতে না আসায় বাসের শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে ড্রামের ঢাকনা খুললে এক নারীর লাশ দেখে তারা থানা পুলিশকে খবর দেয়। গত শনিবার বরিশাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানার এসআই আব্দুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের আসামি করে গত শনিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আজ রবিবার খালেকের বাড়ি অভিযান চালিয়ে তাকে পাওয়া না গেলেও তার স্ত্রী রহিমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। একই সাথে হত্যাকান্ডের স্থান বরিশাল নগরীর কাশীপুরে নির্মাণাধীন ওই ভবনের নিচ তলা পরিদর্শন করে সেখান থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি হ্যামার এবং গলায় ফাঁস দেয়ার কাজে ব্যবহৃত রশির অংশ বিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক মো. আফজাল হোসেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.