কালের কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ অবলম্বনে শোক দিবসের নাটক সেকেন্দার আলীর চেক
‘সেকেন্দার আলীর চেক’ নাটকের একটি দৃশ্য
৬ মার্চ কালের কণ্ঠ’র প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয় ‘বিরল ভালোবাসা : বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত চেকে স্মৃতি খুঁজে ফেরা’ শিরোনামে একটি সংবাদ। এই সংবাদ অবলম্বনে টিভি নাটক নির্মাণ করেছেন সাইদুল ইসলাম রানা। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একুশে টেলিভিশনে ১৫ই আগস্ট রাত ৮টায় প্রচারিত হবে বিশেষ এই নাটকটি।
বরিশালের অবিভক্ত গৌরনদী উপজেলার [বর্তমানে আগৈলঝাড়া উপজেলা] সেরাল গ্রামের প্রতিভাবান তরুণ রকিব সেরনিয়াবাত ১৯৭৫ সালের ৪ এপ্রিল রাতে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে আততায়ীর গুলিতে মারা যান। রকিব ছিলেন সরকারি গৌরনদী কলেজের নির্বাচিত ভিপি, মুক্তিযোদ্ধা, সংগঠক ও
মুক্তিযুদ্ধকালীন রাডারটিচ ইঞ্জিনিয়ার। একই বছরের ১৬ জুন
রকিব সেরনিয়াবাতের বাবা সেকেন্দার আলীর কাছে তিন হাজার টাকার সরকারি অনুদানের একটি চেক প্রেরণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেকেন্দার আলীও বঙ্গবন্ধুর ভক্ত, বঙ্গবন্ধুও তাঁকে চিনতেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত চেকটি সেকেন্দার আলীর হাতে পৌঁছে জুলাই মাসের শেষ দিকে। এর কিছুদিন পরই আসে ১৫ই আগস্টের কালরাত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। সেকেন্দার আলীর পরিবার অসহনীয় আর্থিক দীনতার মাঝে দিন কাটালেও চেক ভেঙে টাকা তোলেননি সেকেন্দার। স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত চেকটি সংরক্ষণ করে রাখেন নিজের কাছে। ২০০১ সালে মারা যান সেকেন্দার আলী। অন্তিম সময়ে ছোট ছেলে রাজীব সেরনিয়াবাতের কাছে চেকটি দিয়ে বলেন, ‘এটি কেবল চেক নয়, এটিই হলো বঙ্গবন্ধু। এই চেক যে কলম দিয়ে স্বাক্ষর করা হয়েছে সে কলমের কালি তোমার শহীদ ভাই রকিব। এই চেকে আমি বঙ্গবন্ধু আর রকিবকে খুঁজে পাই। কোনো দিন যদি পারো চেকটি শেখের বেটির হাতে দিয়ো।’ বলতে বলতে সেকেন্দার আলী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সেই থেকে স্মৃতিবিজড়িত চেকটি সেকেন্দার আলীর পরিবার সংরক্ষণ করে রেখেছে।
নাটক ‘সেকেন্দার আলীর চেক’ রচনা করেছেন মানস পাল, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় সাইদুল ইসলাম রানা। পিং পং এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে প্রযোজনা করেছেন শুক্লা বণিক, নির্বাহী প্রযোজক তুষার এইচ তুর্য। নাটকে সেকেন্দার আলীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরমান পারভেজ মুরাদ। আরো অভিনয় করেছেন গোলাম ফরিদা ছন্দা, সানজিদা মিতু, প্রণব ঘোষ প্রমুখ।
সাইদুল ইসলাম রানা বলেন, ‘কালের কণ্ঠে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর প্রতিবেদকের সহায়তায় আমরা সেকেন্দার আলীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলি। তাদের সহযোগিতায় চার মাস ধরে শুটিং করি। করোনার কারণে সময় একটু বেশিই লেগেছে। আশা করছি, নাটকটি সবার ভালো লাগবে।
’সৌজন্যে. দৈনিক কালের কন্ঠ