একজন রেমিটেন্স যোদ্ধার করুন কাহিনী
আহছান উল্লাহ।
করোনা ভোগান্তিতে ইটালীর নাগরিক রেমিট্যান্স যোদ্ধা মৃধা মোহাম্মদ খোকান। এক মাসের জন্য পৈত্রিক নিবাস বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন পালরদী গ্রামের বাড়িতে এসে ছয় মাসেও ফিরতে পারছেন না পরিবারের কাছে। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত । ঔষধও শেষ হয়ে গেছে বিকল্প ঔষধও পাওয়া যাচ্ছে না। কাতার এয়ার এবং টার্কিস এয়ারে দুইবার টিকিট কেটেও ফিরতে পারেননি পরিবারের কাছে। গ্রামের বাড়িতে বসে কাঁদছেন তিনি আর ইটালী বসে কাঁদছেন স্ত্রী সন্তানরা। জরুরিভাবে কর্মস্তলে যোগ না দিলে চাকুরি হারানোর সম্ভবনা রয়েছে। অব্যাহতি দেয়া হবে মর্মে তার মালিক মিসেস পেলাতোনী দোনা তেল্লা চিঠিও করেছেন।
বৃহস্পতিবার মৃধা মোহাম্মদ খোকান এর পারিবারিক সুত্র থেকে জানাগেছে, ৩২ বছর পূর্বে ইটালী পারি জমান এই রেমিটেন্স যোদ্ধা। দীর্ঘ্যদিন সুনামের সাথেই ইটালীতে বসবাস করছেন তিনি। নাগরীকত্বও লাভ করেছেন। দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে ইটালীর পেরুজা শহরের এস্তারাদা ডেল মানদোলেতো এলাকায় বাস করেন। তিনি দীর্ঘদিন হার্টের সমস্যায় ভূগছেন। একা গত ১৩ ফেব্রƒয়ারী বাবা মায়ের জন্য দোয়া অনুষ্ঠানসহ পারিবারিক কাজে এক মাসের জন্য দেশের বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসে করোনার কারনে আর ফিরতে পারেননি ইটালীতে। ঔষধও শেষ অপরদিকে ইটালীতে পরিবারের বিভিন্ন সমস্যাও সমাধান করতে পারছেন না। ইটালীতে বসবাসরত সন্তানরা অল্পবয়স । পাহারি এলাকা হওয়ায় বাসা থেকে ১২ কিলোমিটার দুরে গিয়ে খাদ্য সংগ্রহ করতে হয়। আর এ পথে গাড়ীর কোন বিকল্প নাই। যে কারনে ইটালীতে অবস্থারত পরিবারে খাদ্য সঙ্কটসহ নানা সমস্যায় দিন পার করছেন। তিনি ইটালী থেকে আসার সময় কাতার এয়ারের টিকিট নিয়ে এসেছিলেন। সাম্প্রতি ইটালীতে সব লকডাউন তুলে নিলে তিনি কাতার এয়ারের সাথে যোগাযোগ করলে সিরিয়াল পেতে বিলম্ভ হয়।
ভূয়া স্বাস্থ্য সনদ ধরা পরায় ইটালী সরকার কাতারসহ বিভিন্ন এয়ার নিষিদ্ধ করেন। এর পর তিনি টার্কিস এয়ারে টিকিট করেও সিরিয়াল বিরম্ভনায় পরেন। এদিকে তার মালিক মিসেস পেলাতোনী দোনা তেল্লা দীর্ঘ্যদিন কর্মস্তলে যোগদান না করায়, চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে বলে অফিসিয়াল চিঠি দিয়েছেন এতে তিনি আরো ভেংগে পরেছেন।
গতকাল চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তার ছোট ভাই ফুয়াদ মৃধা জানান, তার ভাই দীর্ঘ্যদিন হৃদরোগে আক্রান্ত। ইটালীতেই তার চিগিৎসা চলছিল। এক মাসের ঔষধ নিয়ে আসছিলেন। করোনায় লকডাউনে পরে বাংলাদেশী চিকিৎসকের কাছে গেলে তারা ইটালী ডাক্তার কতৃক দেয়া দুটি ঔষধের একটির বিকল্প পেয়েছেন। ২য় ঔষধটির বিকল্প আমাদের দেশে পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা বলেছেন তার ভাইকে ইটালীয়ান চিকিৎসকদের স্বরনাপন্য হওয়ার জন্য।
রেমিটেন্স যোদ্ধা মৃধা মোহাম্মদ খোকান কালের কন্ঠকে জানান, তার মালিক দীর্ঘ্যদিন কর্মস্তলে যোগদান না করায় চাকুরিতে রাখা যাবে না মর্মে চিঠি দিয়েছেন। দুতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছেন বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু আমার স্ত্রী সন্তানদের একটাই আকুতি হয়ত তুমি আসো না হয় আমাদের বাংলাদেশে নিয়ে যাও। বিভিষিকাময় দিন পার করছি। স্ত্রী সন্তানদেরর বুজাতে পারছিনা কিছু । অপরদিকে চাকুরিটা চলে গেলে আরেক সমস্যা। জানিনা আমার জন্য কি পরিনতি অপেক্ষা করছে ।