ভোলায় জলদস্যুদের গুলিতে চার জেলে গুলিবিদ্ধ, আটক-৪

0
(0)


আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল
মুক্তিপনের জন্য ভোলার মেঘনা নদী থেকে বুধবার ভোরে জেলেদের অপহরনের সময় পুলিশের অভিযান টের পেয়ে জলদস্যুদের ছোড়া গুলিতে চার জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তা অভিযান চালিয়ে চার জলদস্যুকে আটক করেছে।
ভোলার চরজহিরউদ্দিন তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ ফিরোজ কবির জানান, আটককৃত জলদস্যুরা হলো-লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরলক্ষী গ্রামের জামাল উদ্দিনের পুত্র মোঃ শামীম (৩০), একইগ্রামের ওয়ারেছ মিয়ার পুত্র মোঃ ওসমান (২৫), চরগজারিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র সোহেল (২৮) ও চরআবজাল গ্রামের আবুল কালামের পুত্র দিদার উদ্দিন (২৮)।
এছাড়া জলদস্যুদের ছোড়া গুলিতে আহত জেলেরা হলেন-চরজহিরউদ্দিন এলাকার সোনাপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের পুত্র জসিম উদ্দিন (৩৫), একই এলাকার মৃত মোফাজ্জেল হোসেনের পুত্র মোঃ ইউনুস (২২), মোঃ মোজাম্মেল হকের পুত্র বাচ্চু মিয়া (২৮) ও আব্দুল জলিলের পুত্র মোঃ মহসিন (৪৯)। আহতদের পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সময়ে ভোলার বিভিন্ন নদী থেকে জলদস্যুরা জেলেদের অপহরন করে মুক্তিপন আদায় করে আসছিলো। বুধবার ভোরে মেঘনার চরজহিরউদ্দিন এলাকায় জলদস্যুরা ট্রলারযোগে মাছ ধরারত জেলেদের অপহরনের গোপন সংবাদ পেয়ে দস্যুদের আটক করার জন্য তিনি একদল পুলিশ নিয়ে নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জলদস্যুরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুরতে থাকে। তাদের ছোড়া গুলিতে নদীতে মাছ ধরারত চার জেলে গুলিবিদ্ধ হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী গোলাগুলির পর পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের সহায়তায় নদীর চারিদিক থেকে ইঞ্জিনচালিত কয়েকটি ট্রলার দিয়ে ঘিরে জলদস্যুবাহী একটি ট্রলার আটক করে। এসময় ওই ট্রলার থেকে চার জলদস্যুকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে বেশকিছু গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পরে আটককৃতরা জানিয়েছে তারা তাদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র নদীতে ফেলে দিয়েছে। একইসময় জলদস্যুবাহী আরও একটি ট্রলার দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ফিরোজ কবির আরও জানান, আটককৃত জলদস্যুদের বিশাল একটি গ্রুপ রয়েছে। তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে চরজহিরউদ্দিন, আলেকজান্ডার ও রামগতি থানা এলাকার মেঘনা নদীতে দীর্ঘদিন থেকে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিলো। তিনি আরও জানান, জলদস্যুদের গুলিতে আহত চার জেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত। পাশাপাশি চার জলদস্যুকে আটকের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, এরআগে গত ১৩ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে ভোলার মেঘনা নদী থেকে অপহরণের ২৪ ঘন্টা পর দুই জেলেকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ডের সদ্যসা। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে এক দস্যুকে। মেঘনার ভোলার চর নামক এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন-লক্ষীপুর জেলার মজুচৌধুরীহাট এলাকার মনির হোসেন ও আব্দুল করিম। আটক দস্যু সাজু লক্ষীপুর সদরের রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা। কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, মেঘনার বঙ্গের চর পয়েন্টে মাছ ধরার সময় একদল জলদস্যু ওই দুই জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অপহৃতদের উদ্ধারে তারা মুক্তিপণ দাবি করে। খবর পেয়ে সোমবার রাতে কোস্টগার্ডের একটি দল ইলিশা পয়েন্ট থেকে দস্যু সাজুকে আটক করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে অভিযানে নামলে দস্যুরা পালিয়ে যায়। পরে দস্যুদের আস্তানা থেকে অপহৃত দুই জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.