প্রশিক্ষণ আমাদের জ্ঞান ও কাজের দক্ষতা বাড়ায় – উপসচিব মোহাম্মদ শওকত ওসমান

0
(0)

ছবিতে উপসচিব মোহাম্মদ শওকত ওসমান উপজেলা সম্মেলন কক্ষে প্রশিক্ষণে উদ্বোধনী বক্তব্য দিচ্ছেন। পাশে রয়েছেন মতলব-উত্তর উপজেলার ইউএনও শিউলী হরি এবং গ্রাম আদালতের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস।।

বিশেষ প্রতিবেদক, চাঁদপুর: আজ ৪ ডিসেম্বর ২০১৯ বুধবার সকালে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সম্মেলন কক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের জন্য শুরু হয় গ্রাম আদালত বিষয়ক দুই দিনব্যাপী রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণের উদ্বোধন-পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের বিদায়ী স্থানীয় সরকার উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ শওকত ওসমান, উপসচিব। এতে সভাপতিত্ব করেন  ফরিদগঞ্জের নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রাম আদালত বিষয়ক ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস, যুব-উন্নয়ন উপপরিচালক মোঃ সামসুজ্জামান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাসুদা আক্তার। এছাড়াও এ অনুষ্ঠানে উপজেলা মহিলা-ভাইস চেয়ার পারসন মাজেদা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি উপসচিব মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, প্রশিক্ষণ আমাদের জ্ঞান ও কাজের দক্ষতা বাড়ায়। গ্রাম আদালত যেহেতু নির্ধারিত কিছু আইন ও বিধি অনুসরণ করে পরিচালিত হয় সেহেতু এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করাটা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছিল। কারণ, গ্রাম আদালত সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে গ্রাম আদালতের এজলাসে বসে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্য গ্রাম আদালত কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে গ্রাম আদালতের নির্দিষ্ট কিছু ধারা ও বিধিমালার কিছু বিধি অবশ্যই জানতে হবে এবং বুঝতে হবে।

উপসচিব আরো বলেন, বর্তমান সরকার গ্রাম আদালত সক্রিয় করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পাধীন ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতের এজলাস স্থাপন করা হয়েছে যাতে এলাকার মানুষ মনে করে যে, এটি কোন সালিশ-দরবার নয় বরং বিচার। আর বিচার মানেই হল আইন ও বিধি অনুসরণ করে বিরোধ নিস্পত্তি করা। সুতরাং গ্রাম আদালতকে কোন ভাবেই সালিশ-দরবারের স্থান মনে করা যাবে না। সালিশ ও বিচারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হল বিচার নির্ধারিত আইন ও বিধি মেনে নিস্পত্তির কাজ করে আর অন্যদিকে সালিশ আইন না মেনে ব্যাক্তি বিশেষের স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নিস্পত্তির কাজ করে। আইনের শাসন না থাকলে সমাজে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এজন্য গ্রাম আদালত সক্রিয় করতে হবে। গ্রাম আদালতের হাতে জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের রায় দেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র সহযোগীতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ৪-১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত এক নাগাড়ে গ্রাম আদালত বিষয়ক এই বিশেষ প্রশিক্ষণ চলবে। এতে ফরিদগন্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১১০ জন ইউপি সদস্য মোট পাঁচটি ব্যাচে বিভক্ত হয়ে অংশগ্রহণ করবেন। আজকের এই ব্যাচের প্রশিক্ষণে বালিথুবা-পশ্চিম ও সুবিদপুর-পূর্ব ইউনিয়নের মোট ২২ জন ইউপি সদস্য অংশগ্রহণ করছেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে এই প্রশিক্ষণ চলছে। এতে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছেন জেলার ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর । এছাড়াও প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা ব্লাস্টের জেলা ও উপজেলা সমন্বয়কারীবৃন্দ সহযোগীতা দিচ্ছেন।

প্রশিক্ষণে যে সকল বিষয় উপস্থাপন করা হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি (এডিআর), গ্রাম আদালত আইন ও বিধিমালা, গ্রাম আদালতের ধাপসমূহ, শুদ্ধাচার, মূল্যবোধ ও গ্রাম আদালত; জেন্ডার ও গ্রাম আদালত। প্রশিক্ষণে গ্রাম আদালতের উপর একটি ভিডিও-শো প্রদর্শন সহ গ্রাম আদালতের মক-ট্রায়াল করা হচ্ছে যেখানে ইউপি সদস্যবৃন্দ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.