যৌতুকের বলি আগৈলঝাড়ার রিমার ঘাতক স্বামী ও শ্বাশুড়ি আটক
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল
স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের দাবিকৃত দুই লাখ টাকা যৌতুক দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাকবিতন্ডার মধ্যে এক সন্তানের জননী গৃহবধূ রিমা আক্তারকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর লাশ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিল পাষন্ড স্বামী ও শ্বাশুরি। লোকহর্ষক এই ঘটনার মাত্র একদিনের মধ্যে মঙ্গলবার রহস্য উদ্ঘাটনসহ নিহত রিমার ঘাতক স্বামী ও শ্বাশুড়িকে আটক করেছে বরিশাল র্যাব-৮ এর সদস্যরা।
ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার শিবপুর গ্রামের।
রিমার ঘাতক স্বামী মিজানুর রহমান বেপারী ও তার মা আকলিমা বেগমকে আটকের পর র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর খান সজিবুল ইসলাম।
মঙ্গলবার দুপুরে আটককৃতদের উজিরপুর মডেল থানায় সোর্পদ করা হয়েছে।
আটককৃতদের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা জানান, গত সাত বছর পূর্বে আগৈলঝাড়া উপজেলার জয়রামপট্টি গ্রামের মৃত বাবুল মিয়ার কন্যা রিমা আক্তারের সাথে পাশ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মান্নান বেপারীর পুত্র মিজানুর রহমান বেপারীর সাথে সামাজিকভাবে ওই গ্রামের বিয়ে হয়।
বিয়ের পরে মিজান তার পরিবার সদস্যরা এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে রিমার উপর নির্যাতন শুরু হয়। রিমার সুখের কথা ভেবে তার পরিবার এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবি পুরন করে। পরবর্তীতে প্রায় দুই বছর পর পূণরায় দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে পুর্নরায় রিমার ওপর শুরু হয় নির্যাতন।
টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় গত ২১ সেপ্টেম্বর মিজান ও রিমার মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। ওইদিন রাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এক সন্তানের জননী রিমাকে শারীরিক নির্যাতনের পরে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। পরে এ হতাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য রিমার মৃতদেহ গলায় ফাঁস লাগিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী আমগাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক বলেন, গৃহবধূর রিমার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় গত ২২ সেপ্টেম্বর উজিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়েরের পর রিমার হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জন্য নিহতের পরিবার র্যাবের সহযোগিতা চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মিজানুর রহমান বেপারী এবং তার মা আকলিমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা র্যাবের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে বর্ননা দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে উজিরপুর মডেল থানায় সোর্পদ করা হয়।