বর্তমান সময় আমরা আট থেকে আশি অধিকাংশই অতি আধুনিকতায় অভ্যস্ত। আর এই অভ্যাসই নানা কঠিন রোগ সৃষ্টির অন্যতম একটি কারণ। যার ফল আমরা কখনও কখনও সারাজীবন ধরে বয়ে বেড়াই। এমনই একটি রোগ হল কোলস্টেরল। কোলস্টেরল থেকে মুক্তি পেতে ওষুধ তো চলেই। তার ওপর চিকিত্সক আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে বেশ কিছু খাবার বাদ দেওয়ার কথা বলেন। এর মধ্যে অনেক সময়ই প্রিয় খাবারও থাকে। কাজেই খাবার ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। কারণ জিভকে পারমিশন দিলে শরীর সেটা মেনে নেবে না। অবশ্য কবিরাজি চিকিত্সকদের মতে, ওষুধ না খেয়েই শুধুমাত্র কিছু খাবার খেয়েই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এই রোগটিকে। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত ব্যায়াম করা ছাড়াও ডায়েট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

এবার দেখে নেওয়া যাক ঠিক কী কী ধরনের খাবার খেয়ে স্বাভাবিক রাখা যায় এই রোগকে-
১. কমলা লেবু এবং টক দই কোলস্টেরল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ভারী খাবার খাওয়ার পরে স্যালাডে খেয়ে নিতেই পারেন লেবু বা শসা।
২. কোলস্টেরল হলে অনেকেই বাদাম জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু আখরোট এবং আমন্ড কোলস্টেরলের পক্ষে খুবই উপকারি। এগুলি খারাপ কোলস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এতে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এছাড়া পিনাট, পাইন নাট ইত্যাদিও কোলস্টেরলের পক্ষে খুবই কার্যকরী।
৩. অলিভ অয়েল মিশ্রিত খাবার কোলস্টেরল থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি অব্যর্থ উপাদান। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টকে সুস্থ রাখে। এতে ফ্যাটের পরিমাণ অনেক কম থাকে। যা কোলস্টেরলের জন্য খুবই ভালো।
৪. মাছ কোলস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্ট অ্যাটাকের হাত থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না।
৫. ওটস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। এতে থাকা ফাইবার আপনার কোলস্টেরল স্বাভাবিক রাখে। যা শরীরের খারাপ কোলস্টেরলের আধিক্য কমিয়ে ভালো কোলস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
৬. গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে বাজে কোলেস্টেরল কমাতে রসুন যথেষ্ট কার্যকর। এটি রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। রসুন রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। দৈনিক অর্ধেক বা এক কোয়া করে রসুন খেলে কোলস্টেরলের মাত্রা ধীরে ধীরে ধীরে কমতে দেখা যায়।
৭. গ্রিন টি বা সবুজ চায়ে আছে পলিফেনল। এটি আমাদের শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমিয়ে শরীরকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। এটি হৃদ্‌রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে শরীরের মেদ কোষে বেশি শর্করা ঢুকতে পারে না। এমনকী, এই চা আমাদের শরীরের ওজন ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
৮. নিয়মিত আমলকীর জুস পান করলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। এতে অ্যামিনো অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় হৃদ্‌যন্ত্র ভালো থাকে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নির্দিষ্ট কিছু হরমোন তৈরি করা এবং হজমে সাহায্য করে কোলস্টেরল। কিন্তু রক্তে প্রয়োজনীয় মাত্রার বেশি কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই কোলস্টেরল কমাতে আজ থেকেই খাদ্য তালিকায় রাখুন এইসব খাবার।