সরকারের পক্ষ থেকে চার হাজার মানুষের গ্রেপ্তারের খবর জানানো হলেও সেখানের চিত্র ভিন্ন। কাশ্মিরে কমপক্ষে চল্লিশ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করলেন ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. এস.কিউ.আর ইলিয়াস। তিন সদস্যের এক প্রতিনিধিদলকে নিয়ে কাশ্মিরে দুদিনের সফর সেরে ফিরে এসে তিনি এই দাবি করেন।

দিল্লীর প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ড. এস কিউ আর ইলিয়াস বলেন, কাশ্মীরে কারফিউ তোলা হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় নীরবতা বজায় রয়েছে। স্কুলগুলিও চালু হলেও শিশুদের উপস্থিতি নেই। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ কারাগারে বন্দী। ৩৭০ ধারা অনুচ্ছেদ অপসারণে কাশ্মীরিরা মর্মাহত। কাশ্মিরীদের দাবি, আমাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের মতামত নেওয়া প্রয়োজন ছিল। কাশ্মীরিদের সাথে কথাবার্তা না বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে ধারণা করা অর্থহীন। ”

ড. ইলিয়াস, জাতীয় সাধারণ সম্পাদক মিসেস সীমা মহসিন এবং শুভ্রামনি আরুমুগাম এই তিনজনের প্রতিনিধি শ্রীনগর ও বারামুল্লা সফর করেন। সফর কালীন সময়ে তারা বিভিন্ন সাংবাদিক, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী, রাস্তার বিক্রেতা সহ কাশ্মিরের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজনের সাথে দেখা করেন। ট্যাক্সি ড্রাইভার, কৃষক এবং শিক্ষার্থীদের সাথেও কথা বলেন তারা।

ডাঃ ইলিয়াস সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন যে, “কাশ্মীর উপত্যকায় ৫ই আগস্ট থেকে যোগাযোগ, মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। তাদের জনজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ৩৭০ নিয়ে উপত্যকার লোকেরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ৩৭০ ধারা এবং ৩৫ এ বাতিল করার পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের এই মনোভাবকে অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক এবং অবৈধ বলে অভিহিত করেন তিনি।

একাডেমিক বিষয়ে শিশুদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডঃ ইলিয়াস বলেন, “উপত্যকার স্কুল ও কলেজগুলি ৫ আগস্ট থেকে বন্ধ। শিক্ষকদের দাবি, তারা পড়ানোর জন্য প্রস্তুত, কিন্তু গণপরিবহনের অভাবে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেতে পারছে না। কাশ্মীরের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ হেফাজতে রয়েছে। পাশাপাশি উপত্যকার মানুষ তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে বিভ্রান্ত, আতঙ্কিত। মানুষের দাবি, সরকার তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে।”

ড.ইলিয়াস এদিন কারফিউ তুলে নিয়ে যোগাজগ পরিষেবা চালু, গ্রেপ্তারকৃত রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি সহ কাশ্মীরের মানুষের জনজীবন স্বাভাবিক করার দাবি জানান।