রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের বিষয়ে সু চি যা বললেন

0
(0)

এস এম রহামান হান্নান, স্টাফ রিপোর্টার
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি রাখাইন থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত দু’বার বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অতীতের সাফল্যের ধারায় এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো আলোচনা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ভাষণে অং সান সু চি রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে করণীয় সম্পর্কে বলেন, রাখাইন রাজ্যে আমাদের অনেক কিছুই করতে হবে। আমরা যদি করণীয় বিষয়গুলোর তালিকা করি ও অগ্রাধিকার ঠিক করি, তাহলে তিনটি প্রধান করণীয় সামনে আসে। তা হলো প্রথমত, বাংলাদেশে যারা চলে গেছে তাদের প্রত্যাবাসন ও কার্যকরভাবে মানবিক সহায়তা দেয়া। দ্বিতীয়ত, পুনরায় স্থানান্তর ও পুনর্বাসন। তৃতীয়ত, অঞ্চলটির উন্নয়ন ও স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
গত ২৪ আগস্ট থেকে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে সু চি বলেন, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা হচ্ছে। আমাদের আন্তর্জাতিক মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। যদিও আমাদের দেশের প্রকৃত অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো আর কেউ বুঝবে না। অন্য কেউই আমাদের মত করে আমাদের দেশের শান্তি ও উন্নয়ন কামনা করবে না।
সু চি বলেন, আমাদের দেশের শান্তি ও উন্নয়ন আমাদের চেয়ে কেউ বেশি চাইতে পারে না। তাই এসব সমস্যা আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, উন্নতি ও সফলতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা বাস্তবায়ন করে যাব। সমালোচনা ও অভিযোগের জবাব কথায় না দিয়ে আমাদের পদক্ষেপ ও কাজ দিয়ে বিশ্বকে দেখিয়ে দেব।
রাখাইন রাজ্যে পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন কার্যক্রম নিয়ে মিয়ানমার সরকারের কর্মপরিকল্পনা জানিয়ে ভাষণে তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসবে শুধু তাদের নিয়ে কাজ করলেই হবে না, বরং দাইং-নেত ও মাইওর মত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, রাখাইন জাতি ও হিন্দুদের নিয়েও আমাদের কাজ করতে হবে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। তাদের জীবন উন্নত করতে আমাদের স্থিতিশীল, টেকসই কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে এবং আগামী বছরগুলোয় সংঘাতময় এই অঞ্চলে স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর হিসেবে এই সম্মিলিত উদ্যোগে তিনি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে সু চি জানান।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে দমন অভিযান শুরু হয়। ওই অভিযান শুরুর পর সোয়া পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.