0
(0)

মোস্তফা কামাল

আগে নিজেকে বদলাও

তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে এবং সফল হওয়ার কলাকৌশল শেখাতে কালের কণ্ঠের অনলাইনে শুরু হয়েছে নতুন ধারাবাহিক আয়োজন ‘আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখো।’ সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মোস্তফা কামাল নিয়মিত লিখছেন। স্বপ্ন দেখাবেন তরুণদের। স্বপ্ন আর আশাজাগানিয়া লেখা পড়ুন কালের কণ্ঠ অনলাইনে।

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে অনেক কিছুই বদলাতে হয়। যুগের হাওয়ায় একটা অনাধুনিক মানুষও আধুনিক হয়ে ওঠে। উঠতে হয়। তা না হলে ছিটতে পড়তে হয়। পরিবেশ পরিস্থিতিও মানুষকে তৈরি করে। আবার কিছু জিনিস আছে সেগুলো মানুষ দেখে দেখে কিংবা ঠেকে ঠেকে শেখে। শিখে নিতে হয়।

কিছু বিষয় আছে নিজের পরিবার থেকে শিখতে হয়। আবার কিছু আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শিখে নিতে হয়। মানুষের সঙ্গে মানুষের ব্যবহার, সভ্যতা, ভব্যতা মা-বাবার কাছ থেকে মানুষ শেখে। আবার বিদ্যা-শিক্ষা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে আরো কিছু আচার-ব্যবহার মানুষ শেখে। এভাবেই মানুষের জীবন হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ ভালো রেজাল্ট করলে আমরা খুব বাহবা দেই। অনেকে খুব ঈর্ষা করি। ও এতো ভালো রেজাল্ট করল! আমি পারলাম না! ও যে কষ্টটা করল তা আমি দেখলাম না। ও সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে লেখাপড়া করে। ও প্রতিদিন রাতে গভীর মনোযোগ দিয়ে ক্লাসের পড়া শেষ করে। ও স্কুল ফাঁকি দেয় না। হোমওয়ার্ক ফাঁকি দেয় না। ও নিয়মিত খেলাধুলা করে। ও সময় মতো ঘুমাতে যায়। অথচ আমি ওর মতো নিয়মকানুন মানি না। আমি আমার খেয়ালখুশি মতো চলি। তাহলে কি করে আমি ওর মতো ভালো করব?

চাকরি ক্ষেত্রেও অনেকে আছেন তর তর করে ওপরে উঠে যাচ্ছেন। আর কেউ একই জায়গায় পড়ে আছেন। কেন এ রকম হয়? যিনি নিয়মিত অফিস করেন, ঠিকঠাক মতো নিজের কাজটা করেন। কাজে কোনো ফাঁকি দেন না। কোনো রকম অসততা করেন না। কাজটাকে নিজের মনে করেন। তিনি যদি তর তর করে ওপরে উঠে যায় তাহলে কারো কিছু বলার থাকে? যিনি নিয়মিত অফিসের কাজ ফাঁকি দেন। ঠিকমতো অফিসে যান না। অসৎ কাজে ব্যস্ত থাকেন। কাজটাকে নিজের মনে করেন না। তিনি যদি তর তর করে ওপরে উঠেন তাহলে আমরা সবাই অবাক হবো না? নিশ্চয়ই অবাক হবো।

তাহলে কি করবে হবে? নিজেকে বদলাতে হবে। নিজের পুরনো ধ্যান-ধারণাগুলো পাল্টাতে হবে। নিজেকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। আমি কেন পিছিয়ে, কিংবা একই জায়গায় পড়ে আছি? কেন এগোতে পারছি না, সে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে।

অনেকে বলেন, মানুষের অভ্যাস নাকি বদলানো যায় না। কেন যাবে না? যদি খারাপ কোনো অভ্যাস কারো থেকে থাকে; যদি তা জীবনের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তাহলে তা অবশ্যই বদলাতে হবে। যেমন: অনেকের আচার আচরণ ভালো নয়। অন্যকে হার্ট করে কথা বলে। কথায় কথায় অন্যকে আঘাত করে। এ ধরনের মতো কারো প্রিয় হয় না। ফলে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। এ ধরনের অভ্যাস অবশ্যই বদলাতে হবে।

অনেকের অভ্যাস দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা। রাত জাগা। আবার কারো ধূমপান, মদ্যপানের অভ্যাসও আছে। এসব অভ্যাস নাকি বদলানো যায় না। কেন যাবে না? এসব তো এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা। এগুলো অবশ্যই বলদাতে হবে। সবক্ষেত্রেই নিয়মানুবর্তিতা দরকার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, মানুষের নেতিবাচক কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য জীবন এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করে। সে ক্ষেত্রে সেই নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো বাদ দিতেই হবে। অন্যথায় সামনে এগোনো যাবে না। নিজের জীবন সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হলে নিজেকে বদলাতে হবে আগে।

লেখক : সাহিত্যিক ও নির্বাহী সম্পাদক, কালের কণ্ঠ

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.