পৃথিবীর ফুসফুস’খ্যাত অ্যামাজনে আগুনের ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক সংকট’ আখ্যা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এই পরিস্থিতিকে সমৃদ্ধ অর্থনীতির সাত দেশের সংগঠন জি-৭ সম্মেলনের সর্বোচ্চ আলোচনাসূচিতে রাখার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। তবে ব্রাজিল জানিয়েছে, তারা সম্মেলনে অংশ নেবে না। ফরাসি প্রেসিডেন্ট টুইটারে লিখেছেন, ‘আমাদের বাড়ি পুড়ছে।’

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স (আইএনপিই) বলছে, এ বছর এখন পর্যন্ত ব্রাজিলে ৭২,৮৪৩টি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেকের বেশি আগুনের ঘটনা অ্যামাজন জঙ্গলের, যা আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। তাদের হিসাব মতে, দাবানলে প্রতি মিনিটে অ্যামাজনের প্রায় ১০,০০০ বর্গমিটার এলাকা পুড়ে যাচ্ছে, যা একটি ফুটবল মাঠের প্রায় দ্বিগুণ আয়তনের সমান (একটি ফুটবল মাঠের আয়তন প্রায় ৫ হাজার ৩৫১ বর্গমিটার)। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এ অবস্থা চলতে থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী লড়াইয়ে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে

গবেষকদের মতে এই বন প্রতিবছর ২০০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। সে কারণে একে ডাকা হয়ে থাকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ধীর করতে অ্যামাজনের ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘(পৃথিবীর) ফুসফুসখ্যাত অ্যামাজন রেইনফরেস্ট আমাদের গ্রহের ২০ শতাংশ অক্সিজেন সরবরাহ করে- তাতে আগুন জ্বলছে।’ টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে জি-৭ সম্মেলনের প্রথম দুই দিনে এর সদস্যদেরকে এ বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।’

সংরক্ষণবাদীরা অ্যামাজনের এই অবস্থার জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করছেন। তারা বলছেন, জমি সাফ করতে তিনি কাঠুরে ও কৃষকদের উৎসাহিত করেছেন। তবে বলসোনারো দাবি করেছেন, বেসরকারী সহায়তা সংস্থাগুলো এই আগুনের হোতা। তবে তিনি এই দাবির সমর্থনে কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া বক্তব্যে দাবি করেছেন, এই অঞ্চলে আগুন লাগানোর পেছনে কৃষকরাও জড়িত থাকতে পারে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অ্যামাজনে আগুনের ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন।টিডিএন