আগৈলঝাড়ায় পচা পানিতে বন্দি তিন ইউনিয়নের বাসিন্দা

0
(0)

আগৈলঝাড়ায় পচা পানিতে বন্দি তিন ইউনিয়নের বাসিন্দা

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল
বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উন্নয়ন কাজের জন্য ঠিকাদারের দেয়া বাঁধ কাজের পরে ছয় মাসেও অপসারণ না করায় পচা পানির জলাবদ্ধতায় পবিবেশ দুষনের কবলে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েক লাখ বাসিন্দা।
বাঁধের কারণে পচা পানির দুষনের আওতায় থাকা উপজেলার উত্তরাঞ্চলের ইউনিয়ন রাজিহার, বাকালের অধিকাংশ এলাকা ও পূর্বাঞ্চলের গৈলা ইউনিয়নের সমগ্র খাল-বিল এখন মাছ শুন্য। বাঁধের কারণে পানি চলাচল করতে না পারায় দুষিত পানির চুলকানির কারণে চর্ম রোগের আশংকায় চাষিরাও তাদের জমি পরিস্কারের কাজ করতে পারছে না। শ্রমিকেরা নামছে না পানির কোন কাজে। সাধারন মানুষ পচা পানিতে হাত পা পর্যন্ত ভিজাতে পারছে না।
বর্তমান ভরা বর্ষা মৌসুমে ওই উল্লেখিত এলাকার খাল বিলে বিভিন্ন দেশী প্রজাতির মাছের ব্যপকতা ও সহজলভ্যতা থাকার কথা থাকলেও এখন ওই এলাকার বাজারগুলো দেশী মাছ শুন্য। জেলেরা তাদের জালে বা বরশিতে কোন মাছ পাচ্ছে না।
রাজিহার ইউনিয়নের রাজিহার গ্রামের মৎস্যজীবি হীরা লাল বিশ্বাস জানান, বর্ষা মৌসুমে বর্শি দিয়ে এবং জাল পেতে মাছ ধরে তাদের পূর্ব পুরুষের মতো জিবীকা নির্বাহ করে আসছিলো। তবে এ বছর বর্ষাকালে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তার মতো মৎস্য জীবিরা খাল বিল থেকে কোন মাছ ধরতে পারছে না। মাছ ধরতে না পারার কারণ হিসেবে হীরা বলেন, বাঁধের কারণে খালের পানি পচে কালো হয়ে দুষিত হয়ে গেছে, তাছাড়া পানি চলাচল বন্ধ থাকায় পচা পানির ছড়িয়ে পরেছে বিল ও সমগ্র জমিতে। এ কারণে পচা পানিতে কোন মাছ পাচ্ছে না জেলেসহ মৎস্যজীবিরা।
চাষিরা আরও বলেন, জানুয়ারি মাসে সড়ক ও কালভার্ট নির্মানের জন্য খালগুলোর মুখে বাঁধ দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়ন ঠিকাদার এম খান গ্রুপের সত্তাধিকারী মাহফুজ খানের সাইট ম্যানেজার ফরহাদ হোসেন। ওই সময় ভরা সেচ মৌসুমে চাষিরা খালে বাঁধ দেয়ায় বিরোধীতা করে আসলেও উন্নয়ন কাজের স্বার্থে তা মেনে নেয়। উন্নয়ন কাজ শেষ হলেও গত ছয় মাসেও সেই বাঁধ এখনও অপসারন করেনি ঠিকাদার। ঠিকাদারের দেয়া বাঁধ এখন শুধু কৃষকই নয় সকল জনগনের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বাঁধের কারণে খাল-বিলে পচা পানিতে জনগনের অসুবিধার কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারের লোকজন তাকে জানিয়েছেন আগামী ১০/১৫দিনের মধ্যে তারা খালে বাঁধ অপসারন করে পানি চলাচল স্বাভাবিক করবেন।
এব্যাপারে মাহফুজ খানের সাইট ম্যানেজার ফরহাদ হোসেন বলেন, বাঁধ দেয়ার প্রয়োজনীয় কাজ তাদের শেষে হয়েছে। বর্ষার জন্য তারা এতদিন বাঁধ অপসারন করতে পারেন নি। নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে তার বাধ অপসানের বিষয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তারা রাজিহার ও গৈলা খালের মুখের বাঁধ অপসারণ করবেন বলে জানান।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.