কেনেডি পরিবার কি সত্যিই অভিশপ্ত ?

0
(0)

কেনেডি পরিবার কি সত্যিই অভিশপ্ত ?
রবার্ট এফ কেনেডির নাতনি সার্সির মৃত্যু : এই নিয়ে ১৩ জন
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত কেনেডি পরিবারের সঙ্গে ‘অভিশপ্ত’ শব্দটি পরিপূরক। অভিশাপ ও দুর্ভাগ্য যেন এ পরিবারের সঙ্গে আঠার মতো লেগে রয়েছে। ১৯৪০-এর দশক থেকে অভিশপ্তের এ তালিকা দিনে দিনে বড় হয়েছে। সম্প্রতি কেনেডি পরিবারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তালিকায় নাম উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ছোট ভাই রবার্ট এফ কেনেডির নাতনি সার্সি কেনেডি হিলের। কোনো বড় ধরনের অসুস্থতার আগে আলামত ছাড়াই বৃহস্পতিবার মারা গেলেন ২২ বছরের প্রাণোচ্ছল সুন্দরী এ তরুণী। ম্যাসাচুসেটসের হায়ানিস পোর্টের একটি অ্যাপার্টমেন্টে তাকে অবচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে নেয়া হলে সার্সিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, মাত্রাতিরিক্ত মাদক গ্রহণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
সার্সির বাবার নাম পল মাইকেল হিল আর মা কোর্টনি কেনেডি হিল। কোর্টনি রবার্ট কেনেডির মেয়ে। রবার্ট-ইথেল দম্পতির এগারো সন্তানের মধ্যে পঞ্চম কোর্টনি। সার্সি ছিলেন পল ও কোর্টনির একমাত্র সন্তান। সার্সি বোস্টন কলেজে যোগাযোগের ওপর গ্র্যাজুয়েশন করছিলেন। তিনি স্টুডেন্ট ডেমোক্রেটসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আন্দোলন করেছেন বন্দুক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও।
কেনেডি নামটির পিছু ছাড়েনি দুর্ভাগ্য ও অভিশপ্ত শব্দ দুটো। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি আততায়ীর হাতে প্রাণ হারান। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৪৬ বছর। তার মৃত্যুশোক কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও অস্বাভাবিক মৃত্যু ছোবল মারে কেনেডি পরিবারকে। ১৯৬৮ সালের ৬ জুন আততায়ীর হাতে নিহত হন কেনেডির ভাই রবার্ট এফ কেনেডি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনেটর ছিলেন। জন ও রবার্টের ভাই এডওয়ার্ড কেনেডি একসময় বলেছিলেন, ‘আমাদের পরিবারের সঙ্গে যেন অভিশাপ শব্দটি লেপ্টে রয়েছে।’ তাদের আরেক ভাই জোসেফ কেনেডির ৯ সন্তানের মধ্যে চারজনই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। জোসেফ ও রোজ দম্পতির বড় ছেলে জোসেফ জুনিয়র কেনেডি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বোম্বার পাইলট হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ১৯৪৪ সালের আগস্টে প্রাণ হারান। তাদের বড় মেয়ে ক্যাথেলিন ১৯৪৮ সালে ফ্রান্সে এক প্লেন দুর্ঘটনায় মারা যান। প্রেসিডেন্ট কেনেডির ছেলে জন এফ কেনেডি জুনিয়র ১৯৯৮ সালে ৩৮ বছর বয়সে এক প্লেন দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও শ্যালিকাসহ নিহত হন। রবার্ট কেনেডির ছেলে ডেভিড এন্থনি কেনেডি ১৯৮৪ সালে অতিরিক্ত মাদকসেবনের কারণে ২৮ বছর বয়সে মারা যান। রবার্টের আরেক সন্তান মাইকেল কেনেডি ৩৯ বছর বয়সে ১৯৯৭ সালে কলারোডোতে স্কিইং করার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় এডওয়ার্ড কেনেডির নির্বাচনী প্রচার কর্মকর্তা ও সচিব মেরি জো কোপেন নিহত হন। ধারাবাহিক এ অপমৃত্যুর কারণেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীতে ‘কেনেডি অভিশাপ’ শব্দযুগল পরিচিত হয়ে উঠেছে। সার্সির মৃত্যু সেই অভিশাপের কথাই যেন মনে করিয়ে দিল। কোর্টনির সঙ্গে পল মাইকেলের বিয়ে হয় ১৯৯৩ সালে। পল-কোর্টনি দম্পতি তাদের একমাত্র সন্তানের নাম রাখেন সার্সি, যার অর্থ স্বাধীনতা। ২০০৬ সালে পল ও কোর্টনির বিচ্ছেদ ঘটে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.