মহাকবি কায়কোবাদ বা মুন্সী কায়কোবাদ
মহাকবি কায়কোবাদ বা মুন্সী কায়কোবাদ
কায়কোবাদঃ কায়কোবাদ, মহাকবি কায়কোবাদ বা মুন্সী কায়কোবাদ (১৮৫৭ – ১৯৫১) বাংলা ভাষার উল্লেখযোগ্য কবি যাকে মহাকবিও বলা হয়। তাঁর প্রকৃত নাম কাজেম আল কোরায়শী।
জন্ম ও শিক্ষাজীবনঃ
কায়কোবাদ ১৮৫৭ (বর্তমানে বাংলাদেশ) ঢাকার জেলাতে নবাবগঞ্জ থানার অধীনে আগলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ঢাকা জেলা জজ কোর্টের একজন আইনজীবি শাহামাতুল্লাহ আল কোরেশীর পুত্র। কায়কোবাদ ঢাকাতে পোগোজ স্কুল এবং সেইন্ট গ্রেগরী স্কুলে অধ্যয়ন করেন। তারপর তিনি ঢাকা মাদ্রাসাতে ভর্তি হন যেখানে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিল। উপরন্তু, তিনি পরীক্ষা দেননি, বদলে তিনি পোস্টমাস্টারের চাকুরী নিয়ে তার স্থানীয় গ্রামে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি অবশর গ্রহণের আগ পর্যন্ত কাজ করেছেন। ১৯৩২ সালে, তিনি কলকাতাতে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলন-এর প্রধান অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
কাব্যগ্রন্থঃ
বিরহ বিলাপ (১৮৭০) (এটি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ)[১]
কুসুম কানন (১৮৭৩)
অশ্রুমালা (১৮৯৬);
মহাশ্মশান (১৯০৪), এটি তারঁ রচিত মহাকাব্য
শিব মন্দির (১৯২১),
অমিয় ধারা (১৯২৩),
শ্মশানভষ্ম (১৯২৪)[২]
মহররম শরীফ (১৯৩৩), ‘মহররম শরীফ’ কবির মহাকাব্যোচিত বিপুল আয়তনের একটি কাহিনী কাব্য।
শ্মশান ভসন (১৯৩৮)।
মৃত্যুবরণঃ
কায়কোবাদ দীর্ঘ জীবন লাভ করেছিলেন। ঐতিহাসিক সিপাহী বিপ্লবের বছরে সেই ১৮৫৭ সালে তার জন্ম এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেন বাংলাদেশ এর মহান ভাষা আন্দোলনের পূর্ব বছরে ১৯৫১ সালে। ১৯৫১ সালের ২১ জুলাই।
পুরস্কার ও সম্মাননাঃ
বাংলা মহাকাব্যের অস্তোন্মুখ এবং গীতিকবিতার স্বর্ণযুগে মহাকবি কায়কোবাদ মুসলমানদের গৌরবময় ইতিহাস থেকে কাহিনী নিয়ে ‘মহাশ্মশান’ মহাকাব্য রচনা করে যে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছেন তা তাঁকে বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় আসনে স্থান করে দিয়েছে (নুরুল আমিন রোকন, সাপ্তাহিক মানচিত্র)। সেই গৌরবের প্রকাশে ১৯৩২ সালে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলনের মূল অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কবি কায়কোবাদ। তিনি বাঙালি মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রথম সনেট রচয়িতা। তিনি আধুনিক বাংলাসাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি।