কমলগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

0
(0)


কমলগঞ্জ প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের নি¤œাঞ্চলের শমশেরনগর, পতনউষার ও মুন্সীবাজার এলাকায় পাঁচ দিনের বন্যার পর পানি নামতে শুরু করেছে। তবে হতদরিদ্র পানিবন্দি শত শত পরিবারের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি। ৫২ মে.টন চাল বরাদ্ধ হলেও বুধবার থেকে সেগুলো বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে। শুকনো খাবার না থাকায় অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। নদী ভাঙ্গন ও ঢলে শুক্রবার রাত থেকে পানিবন্দি হতে থাকে এসব পরিবার।

পতনঊষার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নন্দ্রগ্রাম, কোনাগাঁও, নিজ বৃন্দাবনপুর, গোপীনগর, রাধাগোবিন্দপুর, মাজগাঁও, বাজারকোণা, কোনাগাঁও, পশ্চিম পতনঊষার, ফরিংগাকোণা প্রভৃতি গ্রামে এখনো মানুষের বসতবাড়িতে পানি রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন সরকারী ত্রাণ সহায়তা আসেনি। পতনঊষারের কৃষক তোয়াবুর রহমান জানান, আমরা ত্রাণ চাই না। বীজ, হালির চারাসহ জরুরী ভিত্তিতে কৃষি পূণর্বাসন চাই। বাজারকোণা গ্রামের রিক্সাচালক ও হোসেন মিয়া জানান, ৫দিন ধরে এ গ্রামের ৩৫টি পরিবার পানিবন্দি। ঘরের চুলা পর্যন্ত জলছে না। এখ নপর্যন্ত কোন ত্রাণ আসেনি। পতনঊষার ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য আং কুদ্দুস জানান, তার ওয়ার্ডে ৬টি গ্রামের প্রায় ৪০০ পরিবার এখনো পানিবন্দি। অনেক লোক বসতঘর ছেড়ে গরু-ছাগল, মালামালসহ বাহিরে আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জলেরও সংকট দেখা দিয়েছে।

এছাড়া উপজেলার শমশেরনগর, পতনউষার, মুন্সীবাজার ও রহিমপুর ইউনিয়নের নি¤œাঞ্ছল এলাকার প্রায় ৩৫টি গ্রামের সাত শ’ পরিবার চারদিন ধরে বন্যার পানি মোকাবেলা করে দিন কাটছেন। চারদিনেও সরকারি কোন ধরণের ত্রাণ না আসায় হত দরিদ্র পরিবার সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কেউ কেউ গবাদি পশু নিয়েও একই ঘরে দিন যাপন করছেন। এসব পরিবার সদস্যদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা গেছে। শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ নিজের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ২শ’ পরিবারের মধ্যে ৫ কেজি চাল, হাফ লিটার সোয়াবিন, এক কেজি পিয়াজ, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিরা ও ১ কেজি আলু বিতরণ করেন। তবে পার্শ্ববর্তী পতনঊষার ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোন ত্রাণ বা শুকনো খাবার দিতে দেখা যায়নি। অনেকেই না খেয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটছেন বলে অভিযোগ করেন।

পতনঊষার ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নারায়ন মল্লিক বলেন, নিজ তহবিল থেকে ২০০ পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। পানির জন্য অনেক স্থানে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে পতনঊষার ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত ৫ মে.টন চাউল বুধবার থেকে বিতরণ করা হবে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, এ পর্যন্ত ৫২ মে.টন চাল ৭টি ইউনিয়ন ও কমলগঞ্জ পৌরসভার মধ্যে বরাদ্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নগদ এক লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হবে। আরও ১০ মে.টন চাল পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.