সবুজবাংলা ডেস্ক: এ দেশ শুকিয়ে যাচ্ছে জলের অভাবে। বর্ষা পেরোতে চলল, বৃষ্টির দেখা নেই। আর ঠিক প্রতিবেশী দেশেই বিপর্যয় ডেকে এনেছে অতিবৃষ্টি। সরকারি সূত্রের খবর, রবিবার পর্যন্ত অন্তত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে নেপালে। নানা কারণে আহত হয়েছেন আরও ৩৮ জন। শুধু তা-ই নয়, বন্যা ও ধসে নিখোঁজ হয়েছেন এখনও পর্যন্ত ৩৫ জন। ছোট্ট দেশটির মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে জনজীবন কার্যত থমকে গিয়েছে।

কাঠমাণ্ডু সূত্রের খবর, এ বছর নেপালে অনেক বেশি বৃষ্টি হচ্ছে স্বাভাবিকের তুলনায়। তার উপরে বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ২৫টি জেলা। ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যৌথ ভাবে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে।

উদ্ধারকারী দলের তরফে জানা গিয়েছে, বন্যা-বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে ১১০০ জনেরও বেশি সংখ্যক বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধু কাঠমান্ডু থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ১৮৫ জনকে। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বহু বাড়ি। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট এবং বেশ কয়েকটি ব্রিজ। উদ্ধারকাজে মোট ২৭ হাজার ৩৮০ জন পুলিশকর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে বন্যার ভয়াবহ ছবি। বিভিন্ন এলাকায় ডুবে গিয়েছে ঘরবাড়ি। শুধু জলের উপর জেগে রয়েছে কিছু বাড়ির চাল। অনেক জায়গায় সাঁতার কেটে, মাথায় করে জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এগিয়ে চলেছে একের পর এক পরিবার।

তবে এই পরিস্থিতি কবে বদলাবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাবে না বলেই আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। বর্ষা এখনও সক্রিয়। আগামী অন্তত দু’-তিন দিন একই ভাবে ভারী বৃষ্টি হবে। ফলে দেশের অন্য সব জায়গাতেও বন্যা হতে পারে। যার প্রভাবে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে।

বাগমতী, কমলা, সপ্তকোশী ও সানকোশী নদীর জল এমনিতেই বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। এই অবস্থায় শনিবার রাতে ছ’ঘণ্টার জন্য ভারত-নেপাল সীমান্তের কোশী ব্যারেজের ৫৬টি স্লুইস গেট খুলে মোট ৩ লক্ষ ৭১ হাজার কিউসেক জল বার করা হয়েছে, যা গত ১৫ বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে বলে জানান এক আধিকারিক।

আবহাওয়াবিদদের মতে, পরিবেশে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। সেই সঙ্গে বদলে যাচ্ছে বৃষ্টির ধরনও। দীর্ঘ দিন অনাবৃষ্টির পরে আচমকা অল্প সময়ে লাগাতার ভারী বৃষ্টি এখন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এর ফলে বিপর্যস্ত হচ্ছে সাধারণ জনজীবন। বিপদে পড়ছেন চাষিরাও।ওয়াল