সেই খাদিজা এখন সন্তানের মা, বাবার বলা নামেই নাম রাখা হয়েছে শিশুটির

0
(0)

 

সাহারুল হক সাচ্চু: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সেই খাদিজা বেগম এখন সন্তানের মা হয়েছে। তার ছেলে সন্তান দুনিয়ার আলো দেখছে। তার পিতার বলা নামেই শিশুটির নাম আলিফ রাখা হয়েছে । তবে তার ভাগ্যে পিতার আদর নেই। কেননা শিশু আলিফের জন্মের ৩০ দিন আগে পিতা ও দাদা একই সময়ে এক সাথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। আজ শনিবার খাদিজা সন্তানসহ স্বামীর বাড়ীতে গেছে। এদিকে নানা চিন্তায় চিন্তিত বিধবা খাদিজা ও তার শাশুড়ী আজিদা খাতুন। তাদের পরিবারে এখন উপার্জনক্ষম কোন পুরুষ বেচে নেই। উল্লাপাড়ার বজ্রাপুর গ্রামের গৃহবধু খাদিজা গত বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় একটি বেসরকারী ক্লিনিকে সিজারিয়ান সেকশন (সিজার অপারেশন) মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। সন্তানের নাম রাখা হয়েছে আলিফ। ছেলে সন্তান হলে এ নামটিই রাখা হবে এমন ইচ্ছা ছিলো পিতা আল আমিনের। প্রায় সাড়ে তের মাস আগে আল আমিনের সাথে খাদিজার বিয়ে হয়। গত ২ জুন নগরবাড়ী মহাসড়কের বোয়ালিয়ায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় খাদিজার স্বামী আল আমিন, শশুড় শেখ সাদী ও চাচা শশুড় আবু সিদ্দিক একসাথে নিহত হয়। সে সময় গৃহবধু খাদিজা ৮ মাসের অন্তঃস্বস্তা ছিলো। সে দিনের দুর্ঘটনার পর থেকেই স্বজনদের হারানোর বেদনা নিয়ে খাদিজা ও তার শাশুড়ী অনেকটা হতাশায় দিন পার করছে। এর সাথে রয়েছে নানা চিন্তা। এখন মুল চিন্তা তাদের সংসার চালানো নিয়ে। এ পরিবারের প্রধান শেখ সাদী গরু ব্যবসা আর খাদিজার স্বামী আল আমিন নিজ বাড়ীতেই একটি মুদি দোকান চালাতো। এ দ’ুয়ের আয় থেকে সংসার চলতো। এরাই পরিবারটিতে উপার্জনক্ষম পুরুষ ছিলেন। এখন এরা বেচে নেই। আবার আবাদি কোন জমিজমাও নেই। যা থেকে খাওয়া জুটবে। একই গোষ্টির খাদিজার চাচা শশুড় আবু সিদ্দিক ছিলেন সে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এ প্রতিবেদকের সাথে ক্লিনিকে বসে কথা কালে খাদিজার শাশুড়ী আজিদা খাতুন জানান, সেদিনের দুর্ঘটনায় তার স্বামী ও ছেলের কাছে থাকা মোটা অংকের টাকা খোয়া গেছে। তার দেবরের কাছে থাকাও টাকাও কে বা কারা নিয়েছে। এরা তিন জনই বোয়ালিয়া হাটে গরু কিনতে যাওয়া কালে দুর্ঘটনা হয়। সরকারী সাহায্য বলতে তার স্বামী ও সন্তানের দাফন-কাফন বাবদ ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে। এরপর আর কোন সরকারী কিংবা অন্য কোথাও থেকে সাহায্য সহযোগীতায় টাকা কড়ি পায়নি। তিনি আরো জানান, চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক খাদিজার সিজারিয়ান সেকশন করিয়ে সন্তান ভুমিষ্ট করানো হয়। এদিকে খাদিজা জানায়, সংসার কিভাবে চলবে আর সন্তানকে কিভাবে বড় করবে এ চিন্তা তার মাথায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.