কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে গৌরনদীর মৃৎশিল্প
মোঃ আহছান উল্লাহ ঃ
নানা প্রতিকূলতার মাঝেও পূর্বপুরুষদের পেশা টিকিয়ে রেখেছেন গৌরনদীর মৃৎশিল্পীরা। প্রাচিনকাল থেকে মানুষের রুচিবোধ, নান্দনিকতা এবং ব্যবহারিক প্রয়োজন মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও কম দামে বাজারে প্লাষ্টিক, মেলামাইনসহ বিভিন্ন পণ্যের দাপটে কমে গেছে মাটির জিনিসের কদর। নেই কোনো সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। এ শিল্পের কাচামাল এটেল মাটির অপ্রতুলতার কারনে পরিবারভিত্তিক বা পাড়াভিত্তিক গড়ে ওঠা এ শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে কালের গর্ভে।
গৌরনদী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের বড় কসবা গ্রামের পালপাড়ার রাধেশ্বাম পাল (৮০) জানান কম দামে বাজারে প্লাষ্টিক, মেলামাইনসহ বিভিন্ন পণ্যের দাপটে কমে গেছে মাটির জিনিসের কদর এছাড়া পরিশ্রম অনুযায়ী ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তারা আগ্রহ হারাচ্ছেন। অনেকেই খুঁজছেন বিকল্প পেশা। একই এলাকার রগুনাথ পাল (৮৫) জানান তাদের এ শিল্পের কাচামাল এঁটেল মাটি কর্মক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে পাওয়া যায় । যা ক্রয় করে শ্রমিকের মজুরি মিটিয়ে পণ্য তৈরি করা পর্যন্ত যা খরচ হয় অনেক সময় তার অর্ধেকও আয় হয় না। যে কারনে আমাদের বিকল্প পেশার চিন্তা করতে হচ্ছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশার দিকে ঝুকছেন। কুমুদিনি পাল (৬৫) জানান আমাদের এ পাড়া ছাড়াও গৌরনদীর টরকি,বিল্বগ্রাম,মেদাকুল এলাকায় প্রায় দুই শতাধীক পরিবার এ পেশার সাথে জড়িত ছিল। গত ৮/১০ বছরে অনেকেই এ পেশা ছেরে দিয়েছেন বর্তমানে এ এলাকায় ২০/২৫ টি পরিবার অনেক কষ্ট করে এ পেশায় টিকে আছেন।
গৌরনদী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কে এম আহসান খায়রুল খান জানান মৃৎশিল্পকে বাঁচাতে প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি নানামুখী পদক্ষেপ ও পৃষ্ঠপোষকতা। মৃৎশিল্প আমাদের একটি ঐতিয্য। মাটির তৈরী জিনিসপত্র ব্যবহারে মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী সে বিষয়ে জনসচেতনতার জন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারনার দরকার।