ভারতের মধ্যপ্রদেশে। জঙ্গলে নেই জল, মরল ১৫ বাঁদর

0
(0)

সবুজবাংলা ডেস্ক: জঙ্গলে নেই খাবার জল। নিজেদের মধ্যে মারপিট করে মারা গিয়েছে ১৫টি বাঁদর। এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে।

নির্ধারিত সময়ের তুলনায় প্রায় এক সপ্তাহ দেরিতে ভারতে এসেছে বর্ষা। কেরল উপকূলে সঠিক সময়ে বর্ষা না আসায় এ বছর আক্ষরিক অর্থেই পারদ চড়েছে সপ্তমে। রাজস্থানের বেশ কিছু জায়গায় তাপমাত্রা পেরিয়েছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসও। অন্যন্য রাজ্যেও হাল ছিল কতকটা তাই-ই। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল বাসিন্দাদের।

শহরাঞ্চলের পাশাপাশি উত্তাপ বেড়েছিল মধ্যপ্রদেশের জঙ্গলেও। চরম জল সংকটে পড়ে গিয়েছিল একদল বাঁদর। মারা গিয়েছে ১৫টি বাঁদর। বন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জলের জন্য নিজেদের মধ্যেই মারপিট করেই মৃত্যু হয়েছে বাঁদরগুলোর। জানা গিয়েছে, ছাগল চড়াতে জঙ্গলের ভিতর গিয়েছিল এক কিশোর। সেই সময়েই একসঙ্গে অতগুলো বাঁদরকে মরে পড়ে থাকতে দেখে সে। গ্রামে ফিরে সকলকে সে কথা জানায় বাচ্চা ছেলেটি। তারপরে গ্রামবাসীরাই যোগাযোগ করে ফরেস্ট গার্ডদের সঙ্গে।

ফরেস্ট অফিসার পি এন মিশ্রর নেতৃত্বে একটি দল গিয়ে পৌঁছয় ওই জঙ্গলে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত করে ওই দল জানায় জলের জন্য মারপিট করেই মারা গিয়েছে এই বাঁদররা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার একটি গুহার মধ্যে ৯টি বাঁদরের দেহ পাওয়া গিয়েছিল। শুক্রবার পাওয়া গিয়েছে আরও ৬টি বাঁদরের মৃতদেহ। এই নিয়ে মোট ১৫টি বাঁদরের দেহ খুঁজে পেয়েছে বন দফতর। জঙ্গলে যখন বাঁদরদের মৃত্যুমিছিল চলছে তখন মধ্যপ্রদেশের তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বনদফতরের তদন্তকারী দল জানিয়েছে, বাঁদরদের মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সব বিষয়ে গুরুত্ব দিলেও প্রাথমিক তদন্তে এটাই অনুমান করা হচ্ছে যে তীব্র জলাভাবে পানীয় জলের জন্য নিজেদের মধ্যে মারপিট করেই মারা গিয়েছে বাঁদরগুলো।

জানা গিয়েছে, এই জঙ্গলে প্রায় পাঁচ থেকে ছ’টি বাঁদরের দল থাকে। তাদের মধ্যে রয়েছে ছোট এবং বড় বাঁদর। আকার-আয়তন থেকে বয়স, সবেতেই পার্থক্য রয়েছে এদের। এতজন বাঁদরের জন্য প্রয়োজনীয় পানীয় জলের অভাব হওয়া এই গরমে স্বাভাবিক। তবে বনকর্মীরা জানিয়েছেন, জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা নদী শুকিয়ে গেলেও বেশ কিছু অংশে এখনও জল জমে রয়েছে। অর্থাৎ জলের ততটাও অভাব দেখে দেয়নি বলেই মত তাদের। পাশাপাশি তারা এটাও জানিয়েছে যে হতে পারে যে তীব্র গরমে জলাভাবে হিটস্ট্রোকেই মারা গিয়েছে ওই বাঁদরগুলি। অন্যদিকে এক দল বাঁদরের জায়গায় অন্য বাঁদররা এসে পড়লেও জায়গার অস্তিত্ব নিয়েও তাদের মধ্যে লড়াই হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

আপাতত ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বাঁদরগুলির দেহ। রিপোর্ট হাতে পেলেই তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে বনদফতর। ঘটনাটি ঘটেছে পুঞ্জাপুরা যোশী বাবা ফরেস্ট রেঞ্জে। সরকারি চিকিৎসক (ভেটেরেনারি) অরুণ মিশ্র এই ময়নাতদন্ত করবেন বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে তা পুনরায় ল্যাবেও পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে বনদফতর। সৌজন্যে দ্য ওয়াল ব্যুড়ো

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.