জামাইষষ্ঠীতে ইলিশের বদলে পেংবা’ মাছ
সবুজবাংলা ডেস্ক: আগামীকাল জামাইষষ্ঠী। কিন্তু জামাই বাবাজীবনের পাতে একটুকরো ইলিশ শ্বশুর মশাই দিতে পারবেন কিনা, সেটা ভেবে আজ থেকেই ঘামতে শুরু করেছেন শাশুড়িরা। জামাইষষ্ঠী অথচ পাতে ইলিশ নেই, এরপর শ্বশুরবাড়িতে মুখ দেখাতে পারবে মেয়ে! চলছে তুমুল ঝগড়া শ্বশুর-শাশুড়ির। থলে হাতে বিকেল বিকেল থেকেই বেরিয়ে পড়েছেন চিন্তিত মুখের শ্বশুর মশাইরা। চক্কর কাটছেন গড়িয়াহাট থেকে গড়িয়া, টালা থেকে টালিগঞ্জ।
ইলিশ না নিয়ে বাড়ি ফিরলে রক্ষে নেই। কিন্তু বাজারে ইলিশের আকাল। থাকলেও জামাইষষ্ঠীতে তার গায়ে হাত দিতে গেলেই ছ্যাঁকা লাগছে। কারণ বাংলাদেশ থেকে এ বার তেমন ইলিশ আসেনি, এর পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে নিম্নচাপের জেরে। তাই আকাশ ছুঁয়েছে ইলিশের দাম।
এই সুযোগে বাজারে এসে গেছে মণিপুরী পেংবা মাছ। মণিপুরের বিভিন্ন নদী ও লোকটাক লেক ছাড়াও চিনের নদনদী ও হ্রদে, মায়ানমারের চিন্দুইন নদীতে এই পেংবা মাছ দেখতে পাওয়া যায়।। এই মাছটির বিজ্ঞান সম্মত নাম ‘অস্টিওব্রামা বেলাঙ্গিরি’। স্বাদে গন্ধে অনেকটা নাকি ইলিশেরই মত।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে হলদিয়া ব্লকে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে রাজ্যে প্রথমবার পেংবা মাছের বিক্রি শুরু হয়েছে। চারশো থেকে পাঁচশো গ্রাম ওজনের মাছটি ইলিশ এবং রুই মাছের সংকর বলে মনে হবে। খুচরো বাজারে পেংবা মাছের দাম পড়বে কিলো প্রতি হাজার টাকা।
ওড়িশার ভুবনেশ্বরের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকোয়া কালচার-এর বিজ্ঞানীরা পেংবা মাছের কৃত্রিম প্রজনন ঘটান। গত বছর সেখান থেকে পেংবা মাছের ধানি পোনা এনে ছাড়া হয়েছিল হলদিয়ার বিভিন্ন ফিশারিতে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে মৎস্য চাষীদের দেওয়া হয়েছিল ‘পেংবা’ মাছের ৬০ হাজার চারাপোনা। এই মাছের চাষ করেন হলদিয়ার বসানচকের শরৎচন্দ্র ভৌমিক, দ্বারিবেড়িয়ার পঞ্চানন মন্ত্রী এবং অরূপ মন্ত্রীরা। গতকাল থেকে পেংবা মাছের ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বিপণনের কাজও শুরু হয়ে গেল।
পেংবা মাছের পাশাপাশি বাজারে এসেছে কিছু মায়ানমারের ইলিশ, সাইজ অনুযায়ী বিকোচ্ছে ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে। বাজারে গঙ্গার দেশি ইলিশ খুবই কম, দেখা গেলেও তা ছোট সাইজের, তাতেও মাছওয়ালা দাম হাঁকছেন ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা প্রতি কেজি। রুপনারায়ণের ইলিশে হাত দেওয়া যাচ্ছে না, কোলাঘাটে নৌকা থেকেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা কেজি দরে।
অতএব জামাই বাবাজীবনকে খাসীর মাংস, চিতলের পেটি, পাবদা, গলদা আর আম কাঁঠাল লিচুতেই তুষ্ট রাখতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন বাংলার শাশুড়িরা। আর হ্যাঁ, যদি পাওয়া যায় একটা পেংবা মাছ। হাজার হোক জামাই বলে কথা।সৌজন্যে দ্যা ওয়াল ব্যুড়ো