যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতা কি শুধু খ্রিষ্টানদের জন্য

0
(0)

সবুজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক//যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের গ্রীষ্মে যখন মুসলিমদের প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বৈরিতার চোখ বন্ধ করে রেখেছিল সে সময় বিচারপতি সোনিয়া সটোমেয়র ভিন্নমত পোষণ পূর্বক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠরা সংবিধানের ‘ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ভিত্তিমূলক নীতির ক্ষতি করছে। তিনি বলেছিলেন, এটা করে আদালত আমাদের দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে এ বার্তা পাঠাচ্ছে যে তারা বহিরাগত এবং রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের পূর্ণ সদস্য নয়।
বৃহস্পতিবার দিনের শেষদিকে সুপ্রিম কোর্ট আবার এ বার্তা পঠিয়েছে। এবার এ বার্তা পাঠানো হয় এক মুসলিম মৃত্যুদন্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ডোমিনিক হাকিম মারসেলি রে-র কাছে। ১৯৯৫ সালে ১৫ বছরের কিশোরী সেলমাকে ধর্ষণ ও হত্যার জন্য তিনি আলাবামায় মৃত্যুদন্ড কার্যকরের অপেক্ষা করছিলেন।
একদিন আগে একটি আপিল কোর্ট রে-র মৃত্যুদন্ড কার্যকর স্থগিত রাখে এ কারণে যে হোলমান সংশোধনাগার স্থাপনার একটি নীতি ধর্মীয় পক্ষপাত প্রদর্শনের বিরুদ্ধে সংবিধানের নিষেধাজ্ঞা সরকার কর্তৃক লংঘিত হয়েছে কিনা তা যাচাই করার জন্য বিচারকগণ আরো সময় চেয়েছিলেন।
রে ছিলেন মুসলিম। তিনি তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার সময় তার পাশে একজন ইমামকে চেয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট সে অনুমতি দেয়নি। আর হোলমান কারাগারে আলাবামা অপরাধ সংশোধন বিভাগের নিয়োগকৃত একজন মাত্র খ্রিস্টান যাজক রয়েছেন। কারা কর্মকর্তারা বলেছিলেন, রে-র ইমামের উপস্থিত থাকার অনুমতি দিলে কারাগারের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি হবে।
রে অভিযোগ করেছিলেন যে, ডেথ চেম্বারে কোনো ইমামের পরিবর্তে খ্রিষ্টান ধর্মযাজকের উপস্থিতি অবাধ ধর্ম পালনে তার প্রথম সংশোধিত অধিকারের লংঘন।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট ৫-৪ ভোটে মৃত্যুদন্ড কার্যকরকরণ এগিয়ে নেয়ার পক্ষে মত দেয়। ইমাম ইউসেফ মাইসনেট কাচের পিছন থেকে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর হতে দেখেন।
সুপ্রিম কোর্টের আরো ৫ জন রক্ষণশীল সদস্য রে-র আবেদনের ব্যাপারে অনড় মনোভাব প্রদর্শন করেন। এক সংক্ষিপ্ত ও অস্বাক্ষরিত আদেশে তারা কারণ দেখান যে তার (রে-র) ধর্মীয় চাহিদার কথাটা দ্রুত উত্থাপন করা দরকার ছিল।
ভিন্নমত পোষণকারীদের পক্ষে বিচারপতি বিচারপতি এলেনা কাগান সংখ্যাগরিষ্ঠদের সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ ভুল বলে আখ্যায়িত করেন।
বিচারপতি কাগান লিখেছেন, এ নীতির আওতায় খ্রিষ্টান বন্দীরা ডেথ চেম্বারে শেষ করণীয় প্রথা সম্পন্ন করার জন্য নিজ ধর্মের একজন যাজককে পেতে পারে। কিন্তু কোনো বন্দী যদি ভিন্ন ধর্মের হয় , তা সে ইসলাম, ইন্ডদি বা অন্য কোনো ধর্ম হয়, সে মৃত্যুর সময় তার স্ব ধর্মের কোনো ধর্মাধিকারীকে পাশে পাবে না। এ আচরণ ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতিষ্ঠা বিধির মৌলিক নীতির বিরোধী।
তিনি আরো বলেন, রে এক জোরালো আবেদন জানিয়ে গেছেন যে রাষ্ট্র যে মুহূর্তে তাকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করছে সে সময় তার ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে রে’র মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। তার আইনজীবীদের একজন স্পেন্সার হান বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রায়ে তার নৈতিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। প্রতিটি মামলায় মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। রে তার জীবনের শেষ মুহূর্তে সমান আচরণ চেয়েছিলেন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.